পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চলেছে রক্ত-মাখা ত্রিশূল হাতে! জর, জরা আর মরা— তিনটে শিকারী কুকুরের মতো ছুটে চলেছে মহাভয়ের সঙ্গে-সঙ্গে, দাতে নখে ষা-কিছু সব চিরে ফেলে, ছিড়ে ফেলে, টুকরো-টুকরো করে। কিছু তাদের আগে দাড়াতে পারছে না, কেউ তাদের কাছে নিস্তার পাচ্ছে না! নদীতে তারা ঝাপিয়ে পড়ছে, ভয়ে নদী শুকিয়ে যাচ্ছে, পর্বতে এসে তারা ধাক্কা দিচ্ছে, পাথর চুর্ণ হয়ে মাটিতে মিশে যাচ্ছে । তারা মায়ের কোল থেকে ছেলেকে কেড়ে নিয়ে যাচ্ছে— আগড় ভেঙে, শিকড় ছিড়ে । মহাভয়ের আগে রাজা-প্রজা ছোটোবড়ো সব উড়ে চলছে, ধুলোর উপর দিয়ে শুকনো পাতার মতো । সবাই কঁপিছে ভয়ে, সব মুয়ে পড়ছে ভয়ে । সব মরে যাচ্ছে, সব নিবে যাচ্ছে— ঝড়ের আগে বাতাসের মুখে আলোর মতো। এক দও কিছু স্থির থাকতে পারছে না । আকাশ দিয়ে হাহাকার করে ছুটে আসছে ভয়, বাতাস দিয়ে মার-মার করে ছুটে আসছে ভয় ! জলে স্থলে ঘরে-বাইরে, হানা দিচ্ছে ভয়— জ্বরের ভয়, জরার ভয়, মরণের ভয়! কোথায় সুখ ? কোথায় শান্তি ? কোথায় আরাম ? সিদ্ধার্থ মনের ভিতর দেখছেন ভয়, চোখের উপর দেখছেন ভয়, মাথার উপর বজ্রাঘাতের মতো ডেকে চলেছে ভয়, পায়ের তলায় ভূমিকম্পের মতো পুথিবী ধরে নাড়া দিচ্ছে ভয়, প্রকাণ্ড জালের মতো চারি দিক ঘিরে নিয়েছে ভয়। সারা সংসার তার ভিতরে আকুলি-বিকুলি করছে। হাজার হাজার হাত ভয়ে আকাশ অঁাকড়ে ধরতে চেষ্টা করছে, বাতাসে কেবলি শব্দ উঠছে রক্ষা করে ! নিস্তার কর । কিন্তু কে রক্ষা করবে ? কে নিস্তার করবে ? ভয়ের জাল যে সারা ংসারকে ঘিরে নিয়েছে। এমন কে আছে যার ভয় নেই, কে এমন আছে যার দুঃখ নেই, শোক নেই, এত শক্তি কার যে মহাভয়ের হাত থেকে জগৎ-সংসারকে উদ্ধার করে— এই অটুট মায়াজাল ছিড়ে ? সিদ্ধার্থের কথায় যেন উত্তর দিয়ে আকাশে-বাতাশে, জলে-স্থলে, পুবে-পশ্চিমে, উত্তরে দক্ষিণে শব্দ উঠল— বিদ্ধা মহিদ্ধিকা— মহাশক্তি বুদ্ধগণ ! সদেবকসস লোকসস সবেব এতে পরায়ণা و ه وعا