পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরীর, এমন শাস্ত ফুটি চোখ নিয়ে, এমন করে এক হস্তে অভয় দিয়ে, অন্য হাতে ভিক্ষে চেয়ে, চরণের ধুলোয় রাজপথ পবিত্র করে কেউ তো কোনোদিন সে নগরে আসে নি । যারা চলেছিল তাকে দেখে তারা ফিরে আসছে ; ছেলে খেলা ফেলে র্তার কাছে দাড়িয়ে আছে ; মেয়েরা ঘোমটা খুলে তার দিকে চেয়ে আছে ! তাকে দেখে কারো ভয় হচ্ছে না, লজ্জা করছে না। রাজা বিম্বিসার রাজপথে এসে দাড়িয়েছেন— তাকে দেখতে। কত সন্ন্যাসী ভিক্ষা করতে আসে কিন্তু এমনটি তো কেউ আসে না। রাজপথের এপার-থেকে-ওপার লোক দাড়িয়েছে— তাকে দেখতে, র্তার হাতে ভিক্ষে দিতে, দোকানী চাচ্ছে দোকান লুটিয়ে দিয়ে তাকে ভিক্ষে দিতে, পসারী চাচ্ছে পসরা খালি করে দিয়ে তাকে ভিক্ষে দিতে ! যে নিজে ভিখারী সেও তার ভিক্ষার ঝুলি শূন্ত করে তাকে বলছে— ভিক্ষে নাও গো, ভিক্ষে নাও! ভিক্ষেয় সিদ্ধার্থের দুই হাত ভরে গেছে কিন্তু ভিক্ষে দিয়ে তখনো লোকের মন ভরেনি! তারা মণিমুক্তে সোনারুপো ফুলফল চালডাল স্তৃপাকারে এনে সিদ্ধার্থের পায়ের কাছে রাখছে, তারা নিষেধ মানবে না, মানা শুনবে না । রাজা-প্রজা ছোটে-বড়ো – সকলের মনের সাধ পুরিয়ে সিদ্ধার্থ সেদিন রাজগেহের দ্বারে-দ্বারে পথে-পথে এমন করে ভিক্ষে নিলেন যে তেমন ভিক্ষে কেউ কোনোদিন দেবেও না পাবেও না। এত মণিমুক্তে সোনারুপো বসন-ভূষণ সিদ্ধার্থের দুই হাত ছাপিয়ে রাজগেহের রাস্তায়-রাস্তায় ছড়িয়ে পড়েছিল যে তত ঐশ্বর্য কোনো রাজা কোনোদিন চোখেও দেখেনি। সিদ্ধার্থ নিজের জন্য কেবল এক-মুঠে শুকনো ভাত রেখে সেই অতুল ঐশ্বর্য মগধের যত দীনছুঃখীকে বিতরণ করে গেলেন । উদরক পণ্ডিত সাতশো চেলা নিয়ে গয়ালীপাড়ায় চৌপাটি খুলে বসেছেন। সিদ্ধার্থ, সেখানে এসে পণ্ডিতদের কাছে শাস্তর শিখতে লাগলেন। উদরকের মতো পণ্ডিত তখন ভূভারতে কেউ ছিল না। লোকে বলত ব্যাসদেবের মাথা আর গণেশের পেট— এই দুইটি ve)× o