পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পুন্নাকে তাদের বাড়ির দরজায় নামিয়ে দিয়ে সোয়াস্তি চলে গেল। সুজাতা তখন গোরু-বাছুর গোয়ালে বেঁধে ছেলেটিকে ঘুম পাড়িয়ে সকালের জন্যে পুজোর বাসন গুছিয়ে রাখছেন । পুল্লা এসে বললে— ‘ম, আজ সত্যি দেবতাকে দেখেছি। কাল খুব ভোরে উঠে যদি তুমি সেখানে যেতে পার ভো তুমিও দেখতে পাবে। সোয়াস্তি আমি হুজনেই দেখেছি। কিন্তু ঠাকুরের কাছে কিছু চেয়ে নিতে ভুলে গেলুম মা ? মুজাতা বললেন– “যদি মনে পড়ত তবে কী চাইতিস পুন্না ? সোয়াস্তির সঙ্গে তোর বিয়ে হোক— এই বুঝি ? পুন্না তখন পালিয়েছে। সুজাতা পুজোর সমস্ত গুছিয়ে রেখে যখন ঘবে গেলেন, পুন্না তখন ছোটো ভাইটির পাশে শুয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে। সুজাতাব চোখে আজ ঘুম নেই। রাত থাকতে তিনি পুল্লাকে ডেকে তুলেছেন। পুন্না গোয়ালেব দরজা খুলে এককোণে একটি পিদিম জ্বালিয়ে গোরুগুলিকে দুইতে বসেছে। ভোবের ঠাণ্ডা হাওয়ায় গোরুগুলির শীত লেগেছে, তারা একটু ভয় খেয়েছে, চঞ্চল হয়ে এদিক-ওদিক চেয়ে দেখছে— এত রাত্রে কে দুধ নিতে এল ? কিন্তু পুন্না যেমন তাদের পিঠে বা হাতটি বুলিয়ে নাম ধরে ডাকছে আমনি তারা স্থির হয়ে দাড়াচ্ছে। স্বজাত উঠোনের এককোণে একটি উনুন জালিয়ে দিয়ে কুয়োর জলে স্নান করতে গেলেন । পুন্না দুধটুকু হয়ে একটি ধোয়া কড়ায় সেই উনুনের উপর চাপিয়ে দিলে— জুধ টগবগ করে ফুটতে লাগল । সুজাতা ধোয়া কাপড় পরে পুন্নাকে এসে বললেন— ‘তুই গোটা কতক ফুল তুলে আন, আমি দুধ জ্বাল দিচ্ছি।’ মোড়লদের বাড়ির ধারেই বাগান ; সেখানে গাদা ফুল অনেক ! পুন্না সেই ফুলে একটা মালা গেথে বটের পাতায় একটু তেল-সি হর পুজোর থালায় সাজিয়ে রেখে সুজাতাকে ভূকছে— ‘মা, চলে, আর দেরি করলে সকাল হয়ে যাবে ; দেবতাকে দেখতে পাবে না।’ "లి