পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মনে দেবল ঋষিকে প্রণাম করে বলছে— ‘ঠাকুর, যেন বুদ্ধদেবের দর্শন পাই ।” দেখতে-দেখতে নৌকো এসে তপোবনের ঘাটে লাগল। সেই ছোটো নৌকোয় নালক তার মাকে দেখতে দেশের দিকে চলে গেল। আজ কত বছর সে তার মাকে দেখেনি। ঠিক সে সময় বরুণার খেয়াঘাট পার হয়ে বুদ্ধদেব সারনাথের তপোবনে এসে নামলেন। আর একটি দিন যদি নালক সেখানে থেকে যেত! কত দেশবিদেশ ঘুরে, কত নদীর চরে খালের ধারে নিত্য সন্ধ্যাবেলায় ভিড়তে-ভিড়তে নালকদের নৌকোখানি চলেছে— যে গায়ে যে লোক তাকে সেই গায়ে রেখে । পুরোনো যাত্রী যেমন নিজের গায়ে নেমে যাচ্ছে আমনি তার জায়গার ঘাট থেকে নূতন যাত্রী এসে নৌকোয় উঠছে। এমনি করে নালকদের নৌকো কখনো চলেছে সকালের বাতাসে পাল তুলে দিয়ে তীরের মতো জল কেটে, কখনো বা চলেছে রাতের অন্ধকারের ভিতর দিয়ে কালো জলে পিদিমের একটু আলোর দাগ টেনে— এমন আস্তে যে মনেই হয় না যাচ্ছি। দিনে-দিনে বর্ষাকালে নদী জলে ভরে উঠছে। আগে কেবল নদীর উচু পাড়ই দেখা যাচ্ছিল, এখন উপরের খেতগুলো, তাব ওধারে গায়ের গাছগুলো ঘরগুলো, এমনকি অনেক দূরের মন্দিরটি পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে। জল উচু হয়ে উঠে বালির চর সব ডুবিয়ে দিয়েছে ! নেীকো যখন নালককে দেশের ঘাটে নামিয়ে দিয়েছে তখন ভরা শ্রাবণ মাস ; ঝুপ-ঝুপ বৃষ্টি পড়ছে, নদীর ধাবে-ধারে বঁাশঝাড়ের গোড়া পর্যন্ত জল উঠেছে। থৈ-থৈ করছে জল ! খালবিল খানা-খন্দ ভরে গেছে, ঘাটের ধাপ সব ডুবে গেছে – স্রোতের জলে বর্ষাকালের নূতন জলে। নালক ঘাটে দাড়িয়ে দেখছে কতদূর থেকে কার হাতের একটি ফুল ভাসতে-ভাসতে এসে ঘাটের এক কোণে লেগেছে ; নদীর ঢেউ সেটিকে একল'ব ডাঙার দিকে, একবার জলের দিকে ফেলে দিচ্ছে আর টেনে নিচ্ছে। নালক জল থেকে t'(t