পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মোগল ভাণ্ডারের অমূল্য মণিমাণিক্য ও জরীজরাবতে মণ্ডিত সাহাজাদী জেবুন্নেসা যখন মীনাবাজারে দর্শন দিলেন তখন মনে হইল আকাশ হইতে ভূর কি পরী নামিয়া আসিয়াছে ! সে রূপ যে দেখিল সেই বলিল হঁ বাদশার মেয়ে বটে ! আজ মীনাবাজারে রূপসীর মেলা বসিয়াছে এবং দেশের সুন্দরী একত্র হইলে যাহা হয় অন্ত কথা নাই – কেবল রূপেরই চর্চা চলিয়াছে । ও রানী দেখিতে কেমন, ও বেগমের রংটা কি প্রকার, কার গহনার কত মূল্য ইহা লইয়াই তর্ক বিতর্ক চলিয়াছে। সেই সময়ে সাহাজাদী বলিয়া উঠিলেন– “ভালো কথা আমরা তো সব রূপসী একসঙ্গে মিলিয়াছি এখন বিচার হউক না আমাদের মধ্যে সেরা রূপবতী কে ? আমি বাদশাহকে বলিয়া তাহাকে আজ পুরস্কার দেওয়াইব ।” তখন সাহাজাদীব পেয়ারের দাসী রোশন বাদশার হুজুরে পুরস্কারের প্রার্থনা জানাইতে ছুটিল। বাদশা শুনিয়া বলিলেন– “খেলাটা জমিতেছে বটে। ভালো, আমি পুৰস্কার দিতে রাজি আছি কিন্তু জেবুন্নেসা যেন সাবধানে থাকেন, রূপেব আগুন লইয়া খেলা কাহারে গাযে যেন অঁাচ না লাগে।” রোশন বাদী মীনবাজারে আসিয়া বাদশাহের মনজুর জানাইবামাত্র সুন্দরী মহলে রূপের পরীক্ষা দিবার জন্য একটা ধূম পড়িয়া গেল। সকলেই পরীক্ষা দিতে অগ্রসর । পরীক্ষা লয় কে ? সকলে মিলিয়া জেবুন্নেসাকে রূপের বিচার করিবার জন্য ধরিয়া পড়িল । তখন সাহাজাদী বলিলেন– “বা ! সবাই পরীক্ষা দিবে আমি বুঝি ফঁাকে পড়িব, সে হইবে না । এই আমেরের বুড়োরানী আছেন ইনিই আজ বিচারপতি হউন ৷” সর্বনাশ ! বাদশাজাদীর সঙ্গে রূপের লড়াই ? সাপ লইয়া খেলা ! সুন্দরীর দল একে একে গা ঢাকা হইতে লাগিলেন এবং খেলা ভাঙিয়া যায় দেখিয়া জেবুন্নেসাও বিশেষ উৎকণ্ঠিত হইয়া উঠিলেন। আখেরের বুড়ারানী জেবুন্নেসার মুখে অসন্তোষের লক্ষণ দেখিয়া বুঝিলেন বাদশাজাদী আজ হয় কোনো নবাবপত্নী কি ওমরাহ কন্যা অথবা হিন্দু রানীকে সকলের সম্মুখে কুরূপ প্রমাণ করিয়া 'LL8