পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ওয়ালাহৎ নামে অষ্টধাতুর পয়সা সমস্ত কাশ্মীর-খণ্ডে প্রচলিত করলেন । বহুদিন এইভাবে যায় ; তোরমান এক সময় নিজের নামে তোরমানি টাকা চালিয়ে, দেশের ওয়ালাহৎ গালিয়ে অষ্টধাতুর এক তোপ প্রস্তুত করতে হুকুম দিলেন। রাজার চর গোপনে একটি তোরমানি টাকার সঙ্গে এই রাজদ্রোহের খবরটা হিরণ্যের কাছে পৌছে দিতে বিলম্ব করলে না, তারপরেই তোরমানি টাকা রাজকোষে জব্দ হল, আর তোরমান বন্দী হলেন, নগরের ওই যে দেখছেন ওপারে ওই বাগিচাটা, ওইখানে— । তোরমানের কারাগার নদীর উপরে, বাগিচার মধ্যে। সেখানে যুবরাজ রানীকে নিয়ে সুখেই রইলেন, কিন্তু ফুলবাগানে ঘেরা হলেও সেট যে কারাগার, এটা তোরমান কিছুতে ভুললেন না ; তাই কুমার প্রবরসেন যেদিন ভূমিষ্ঠ হলেন, সেদিন তোরমান রানী অঞ্জনাকে বললেন— হায়, এক কারাগার থেকে আর এক কারাগারের বন্দী, একে কে মুক্তি দেবে ? রানী সেই রাত্রে সবার অসাক্ষাতে কুমারকে বাগিচার মালিনীকে দান করলেন। তোরমান যখন শুনলেন– যে এসেছিল, সে রইল না, মুক্তিদাতা তাকে নিজের হাতে মুক্তি দিয়ে গেলেন, তখন যুবরাজ নিশ্বাস ফেলে বললেন– মরেছে, না, বেঁচেছে ? অঞ্জন চোখ মুছে বললেন-- বেঁচেছে বাছা আমার। যুবরাজ তোরমানের ফুলবাগিচার কারাগার যেমন কচি মুখের হাসিতে আলো করে দিলে না, তেমনি রাজা হিরণ্যেরও রাজপ্রাসাদ হাজার হাজার সোনার প্রদীপেও আলো হল না— একটি শিশুর অভাবে । দুই রানীর প্রাণে ছুটি ছেলের স্বপ্নই জেগে রইল, আর দুই ভাইয়ের প্রাণ ফুলবাগিচা আর রাজপ্রাসাদে অন্ধকারে মরতে থাকল পলে-পলে । হায়, আঁধার বুঝি আর ঘুচল না, এই বলে দুই দিকে ছুই ভাইয়ের মন যখন বেদন জানাচ্ছে কেবলি, সেই সময় বিদ্রোহের মশাল হাতে যুব প্রবরসেন একদিন কাশ্মীরের সিংহদ্বারে এসে ©ዓ¢