পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৪০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লম্বী-দাড়ি ধাড়ি-বাচ্চ চুনো-পুটি মাকড়-ধোকড় ফিড়িং-ফড়িং কাগ+ বগা কেউ আর আসতে কসুর করে নি। আলিপুরের অত বড়ো যে বাগান, তার অলি-গলি মাঠ-ময়দান একেবারে জীবে জীবারণ্য হয়ে গেছে— শিং কুটি আর ন্যাজে গিস্গিস করছে, কিন্তু সভার পূর্বদিকে চিড়িয়াখানার সিবিল সার্জনের হঠাৎ মশার কামড়ে অকালমৃত্যু হওয়ায় সকলের মুখেই– এমনকি উদ্যানের তরুলতাগুলির উপরেও— যেন কী একটা বিষাদের ছায়া পড়েছে। ওর মধ্যে যারা ডাক্তারকে আন্তরিক ভক্তি-শ্রদ্ধা করতেন এমন সব সুসভ্য জানোয়ার, তারা অশৌচ চিহ্ন কাছ পরেই এসেছেন আর হামবড় নব্য জানোয়ারের দল তারা কাছ কোচা স্থই বর্জন করে কালোর উপরে কালে এক-একটুকরোফিতে লাগিয়ে গোমসা মুখে এদিক-ওদিক করছে। এখানে ওখানে হোমরা-চোমরা সভ্য জন্তুরা দল বেঁধে খুব উৎসাহের সহিত সভার কাজ কী ভাবে চলবে, কী কী নিয়ম কানুন হবে, কাকেই বা সভাপতি করা যাবে, এই-সব নানা দরকারি তর্ক-বিতর্কে ব্যস্ত রয়েছেন। হ্যাট কোট চশমাতে ফিটফাট মিস্টর হনুম্যানকে আসতে দেখে গাছতলায় বনমানুষ বলে উঠলেন— ‘ইনি যে মানুষের নিকট-সম্পর্ক কেউ, সেটা বোঝাতে এর যে বিশেষ চেষ্টা রয়েছে তা বেশই বোঝাচ্ছে ওঁর বেশ ।’ বহুরূপী বললেন– “মানুষের অনুকরণটা কিন্তু কবেছে দিবি।’ বনমানুষ চোখ মটুকে বললেন, ‘অনুকরণ এক, হনুকরণ অন্ত জিনিস।” ঘাসের মধ্যে থেকে সাপ ফেঁাস করে বলে উঠল— ‘ইস, ভঙ্গিমা দেখ । লজ্জা নেই! দুস ? বুড়ে দাড়কাক গাছের উপর থেকে জবাব দিলে— ‘ছ্যাঃ, মানুষের চাল-চোল বানরে কখনো সাজে। ভরতচন্দ্র তো স্পষ্ট বলে গেছেন– “যার যাহ। তারে সাজে ? হতোম প্যাচ দাড়কাককে সাধুবাদ দিয়ে হমুর দিকে চেয়ে কেবলই বলতে লাগল – ‘জুয়ো, দুয়ো, সাত নকলে আসল ভেস্তা ? Ob-8