পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৪৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পাল তুলে। আমি এরই একটা জাহাজের মাস্তুলে চড়ে পিপড়েদের ক্ষুদে শহরের দিকে রওনা হলেম, কালাপানি পার হয়ে। সিন্ধবাদ থেকে রবিনসন ক্রুসো যারাই সমুদ্রে পাড়ি দিয়েছে তাদেরই নানা বিপদ আপদ ঘটেছে, আমাদেরও জাহাজ নানা বিপদ কাটিয়ে কখনো বোম্বেটেদের হাতে পড়ে, কখনো অসভ্যদের হাতে পড়ো-পড়ে হয়ে, কখনো জলের তলাকার পাহাড়ে ধাক্কা খেতে খেতে প্রায় ফুটে হয়ে, একটা ঢাউস তিমি মাছের ন্যাজের ঝাপটা খেয়ে প্রায় কাত হয়ে একটা বন্দরে ঢুকল। সেখানে একজন কাঠপিপড়ে বসে ছিলেন, র্তার মুখে শুনলেম এইটেষ্ট পিপল বন্দর এবং পিপড়েদের ক্ষুদে শহরও একটু আগেই আছে। ঠিক জায়গায় এসে পড়েছি দেখে আমি তাড়াতাড়ি জাহাজের মাস্তুল ছেড়ে সমুদ্রের ধারে একট। হোটেলে বাসা নিতে চললেম । গরমের দিনে রোদ ঝাবী করছে, বৃষ্টি হয় ই ন দেশটাতে, কালে-ভদ্রে এক-আধ দিন যদি দু-একটা শিল পড়ে তো লোকগুলো সে-কটা জমা করে বরফজল খেয়ে ঠাণ্ড হয় । পথে দেখলেম দলে দলে পিপড়ে, তার কেউ বেড়াচ্ছে, কেউ হাওয়া খেতে চলেছে, পুরুষদের সবাই আগাগোড়ী কালো বনাতের কোট প্যান্ট হ্যাট আর বানিশ-করা জুতো পরে। এই গরমে বনাতের কাপড় সয় কেমন করে এদের বুঝলেম না ; আর এদের সবারই কি এক সাজ এক ঢঙ ! মিশকালে মোটা বনাতের কাপড় পর দেখে জানলেম এরা ডেয়ে পি পড়ে, জলে স্থলে ঘাটে মাঠে ঘরে বাইরে সব জায়গায় সব সময়ে এরা ফিটফাট হয়ে চলাচল করছে – গোফের আগা থেকে পায়ের বুট পর্যন্ত কোথাও শাদা নেই, চক্চক্‌ করছে কালো । আমার মনে হল বাইরেটায় এদের হয়তো যত চক্‌মকানি ও কালোর বার্নিশ, ভিতরে হয়তো নেহাত শাদা এর । এই না ভেবে একটা পিপড়ের কাছে এগিয়ে গিয়ে শুধোলেম— ‘আচ্ছ, যদি তুমি এতটা ফিটফাট হয়ে না বেড়াও, কিংবা সাদাসিদে এই আমার মতো ধুতি-চাদরে বেশ বাবু সাজো তো পিপড়ে সমাজে 8(?)