পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৪৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তার আসার কোনো বাধা নেই, তবু সে আসে, কিন্তু খুঁজে পায় না কাকে নেবে। কাঙালিনী কন্যাকে কাদিয়ে তার পোষা এতটুকু পাখিটাকে মেরে চলে যায় ! পাখির প্রাণ আর সোনার খাচায় ধরা রাজকন্যাদের প্রাণ বাতাস ধরে ভাসতে ভাসতে চলে যায়— বিষ্টির মেঘের আড়াল দিয়ে, আপনজনকে ডাকতে ডাকতে, চোখ-ভেজানো বুক-ফাটানো স্বরে ! রাজপুত্র হন রাজকন্যাদের জন্য থেকে থেকে আনমন, আমনি র্তাকে ভোলাতে আসে নতুন নতুন খেলনা, নীলার ময়ুর, সোনার টিয়ে, শিকল-বাধা বাঘের ছা, হাস, ঘোড়া কত কী, ফুধ আসে, ক্ষীর আসে, মোতিচুর আসে, মিহিদানা আসে– রাজপুত্র ভুলে যায়, আবার ভোলেও না! আর কাঙালের মেয়ে, তার আনমনা হবার সময় নেই– সে নিয়মিত ভিক্ষে করে বেড়ায়, আর কাদে পাখির জন্তে ! লোকে বলে— মেয়েট মায়া-কান্না কাদছে, বেশি করে ভিখ, পাবে বলে। ঠাকুর থাকেন বসে ঢল-সমুদ্রের কিনারায়, পায়ের তলায় তার অপার জল টল টল করে জীবন নদী সমস্ত দিনরাত গড়িয়ে চলে ঠাকুরের পা ধুয়ে অকুল-সাগরে মিলতে। ঠাকুরের হাতে একখানি পদ্মপাত, তারি মাঝে টল টল করে জগৎ সংসার— একটি ফোট জলবিন্দু! সেই পদ্মপাতায় ধরা জলবিন্দুর পাশে আর একটি ছোটো ফোটা এসে লাগল, যেন কার চোখের জলে গভা একটি মুক্তো। ঠাকুরের দৃষ্টি— যেমন করে শিশিরের উপর পড়ে সকালের আলো— তেমনি পড়ল এতটুকু জলের ফোটায়। ওদিকে আদরপুরে সকাল থেকে রাজপুত্রের খোজ পাওয়া যাচ্ছে না। রাজবেশ পড়ে আছে ধুলোয়— সোনার পালঙ্ক শূন্ত ! লোক ছুটল চারিদিকে, সৈন্ত ছুটল, সামন্ত ছুটল, খুঁজল সবাই রাজ্যে রাজ্যে— পেলে না ! যদি শিকারে গিয়ে থাকেন— বনে বনে খুজলে, কোথাও নেই। বিদেশে যদি গিয়ে থাকেন— দেশ 8\93