পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মালিয়া পাহাড়ের নিচে লীরনগর। সেখানে যত শিষ্ট, শাস্ত, নিরীহ ব্রাহ্মণের বাস, আর পাহাড়ের উপরে যেখানে বাঘ ডেকে বেড়ায়, হরিণ চরে বেড়ায়, যেখানে অন্ধকারে সাপের গর্জন, দিবারাত্রি ঝরনার ঝঝর, আশ্চর্য-আশ্চর্য ফুলের গন্ধ, প্রকাণ্ড-প্রকাণ্ড বনের ছায়া, সেখানে সেই সকল অন্ধকার বনে-বনে, ভীলরাজ মাগুলিক, সাপের মতো কালো, বাঘের মতে জোরালো, সিংহের মতো তেজস্বী, অথচ ছোটে একটি ছেলের মতে সত্যবাদী, বিশ্বাসী, সরলপ্রাণ ভীলের দল নিয়ে রাজত্ব করতেন । গোহ একদিন সেই সকল ভীল-বালকদের সঙ্গে ভীল রাজত্বে ঘোড়ায় চড়ে উপস্থিত হলেন । সেখানে বল্লম-হাতে বাঘের ছালপরা হাজার-হাজার ভাল-বালক, ঘোড়ায়-চড়া সেই রাজপুত রাজকুমারকে ঘিরে আমাদের রাজ এসেছে রে ; রাজ এসেছে রে!” বলে, মাদল বাজিয়ে নাচতে-নচিতে ঘরে-ঘরে ঘুরে বেড়াতে লাগল। ক্রমে সেই ছেলের পাল গোহকে নিয়ে রাজবাড়িতে উপস্থিত হল। তখন খোড়ে চালের রাজবাড়ি থেকে ভীলদেব রাজ। বুড়ো মাগুলিক বেরিয়ে এসে বললেন—‘হঁ। বে, কোথায় বে তোদের নতুন রাজা ? ছেলের পাল গোহকে দেখিয়ে দিলে। তখন সেই বুড়ো ভীল গোহকে অনেকক্ষণ দেখে বললেন—“ভালে বে ভালে, নতুন রাজার কপালে তিলক লিখে দে।" তখন একজন ভীল-বালক নিজের আঞ্জল কেটে বুড়ে রাজ মাগুলিকের সামনে, বক্তের ফোট। দিয়ে গোহের কপালে রাজতিলক টেনে দিল, ভীলদের নিয়মে সে রক্তের তিলক মুছে দেয়, এমন সাধ্য কারে নেই। গোহ সত্য-সতাই রাজ হয়ে ভীলদের রাজসভায় বুড়োরাজার কাঠের রাজসিংহাসনের ঠিক নিচে একখানি ছোটাে পিড়ির উপর বসলেন । এই পিড়িখানি অনেকদিন শুন্য পড়ে ছিল ; কারণ মাগুলিক চিরদিন নিঃসন্তান। তার দীনদুঃখী সামান্ত প্রজ, তাদের ঘর-আলো-কর কালে বাঘের মতে কালো ছেলে ; কিন্তু হায়, রাজার ঘর চিরদিন অন্ধকার, চিরকাল শূন্য ছিল! সেদিন যখন 이 이