পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/১১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বেলী সাহেব দিদিমাকে তো ভাল করে পরীক্ষা করলেন। ডি. গুপ্তকে বললেন দিদিমাকে বুঝিয়ে দেবার জন্য যে, তিনি একটু এনিমিক হয়েছেন। বললেন, দোওয়ারীবাবু, মাকে তার অস্থখটা বাংলায় ভালো করে বুঝিয়ে দিন । দোওয়ারীবাবু দিদিমাকে ভালো করে বেলী সাহেবের কথা বাংলায় তর্জমা করে বোঝালেন, ‘বেলী সাহেব বলিতেছেন, আপনি কিঞ্চিৎ বিরক্ত হইয়াছেন।” তিনি ‘এনিমিক” এর বাংলা করলেন ‘বিরক্ত’ । দিদিমা বললেন, সে কী কথা, উনি হলেন আমাদের এতদিনের ডাক্তার, আমি ওঁর উপরে বিরক্ত কেন হব । সাহেবকে বুঝিয়ে দিন —ন না, সে কী কথা আমি একটুও বিরক্ত হইনি। দোওয়ারীবাবু যতবার বলছেন ‘আপনি কিঞ্চিৎ বিরক্ত হইয়াছেন দিদিমা ততই বলেন, আমি একটুও বিরক্ত হইনি। মিছেমিছি কেন বিরক্ত হব, আপনি সাহেবকে বুঝিয়ে দিন ভালো করে। এই রকম কথাবার্তা হতে হতে বেলী সাহেব জিজ্ঞেস করলেন, কী হয়েছে, ব্যাপার কী, মা কী বলছেন। জ্যাঠামশায় তখন স্কুলে পড়েন, ইংরেজি বেশ ভালো জানতেন— তিনি বেলী সাহেবকে বুঝিয়ে দিলেন দোওয়ারীবাবু এনিমিকের তর্জমা করেছেন – বিরক্ত হইয়াছেন । তাই মা বলছেন যে তিনি একটুও বিরক্ত হন নাই । এই শুনে বেলী সাহেবের হে হে করে হাসি । জ্যাঠামশায়কে বললেন, মাকে ভালো করে বুঝিয়ে দাও তিনি একটু রক্তহীন হয়েছেন। বলে, দোওয়ারীবাবুর দিকে কটাক্ষপাত করলেন ; বললেন, তুমি বাংলা জানো না দোওয়ারীবাৰু? এতক্ষণে সমস্তার মীমাংস হয়। এড়েদহের বাগানে দিদিমার মৃত্যু হয় । তাকে আমরা দেখিনি, ছবিও নেই – শুধু কথায় তিনি আমাদের কাছে আছেন, পুরোনো কথার মধ্য দিয়ে আমরা তাকে পেয়েছি । কর্তাদিদিমাকে দেখেছি। তার ছবিও আছে, তোমরাও তার ছবি দেখেছ । ফোটে। দিন-দিন স্নান হয়ে যাচ্ছে এবং যাবে, কিন্তু তার সেই পাকাচুল-সি দুর-মাখা রূপ এখনো আমার চোখে জলজল করছে, মন থেকে তা মোছবার নয়। তিনি ছিলেন যশোরের মেয়ে, তখন এই বাড়িতে যশোরের মেয়েই বেশির ভাগ আসতেন। তারা সবাই কাছাকাছি বোন সম্পর্কের So o