পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/১৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রিহার্সেলে সে যা সব মজা হত আমাদের। রিহার্সেল ছেড়ে প্লেতে আর আমাদের জমত না। যেমন ছবি আঁকা, যতক্ষণ ছবি আঁকি আনন্দ পাই, ছবি হয়ে গেল তো গেল। এও তাই। রবিকাকা তাই পর পর একটা ছেড়ে আর-একটা লিখেই যেতেন। আমরা তে দিনকতক স্টেজেই ঘরবাড়ি করে ফেলেছিলুম। প্ল্যাটফর্ম পাতা থাকত, রোজ দুপুরে তাকিয় পাখা পানতামাক নিয়ে সেখানেই আখড়াবাড়ির মতো সবাই কাটাতুম। মশগুল হয়ে থাকতুম ড্রামাতে। সে যে কী কাল ছিল। তখন রবিকাকার রোজ নতুন নতুন স্বষ্টি । তার পর এই বাড়িতেই ত্রিপুরার রাজা বীরচন্দ্র মাণিক্যকে ‘বিসর্জন নাটক দেখানে হয়, পুরানো সিন তৈরি ছিল সেই-সব খাটিয়েই। আমাদেরও পার্ট মুখস্থ ছিল। রবিকাকা পার্ট নিয়েছিলেন রঘুপতির, অরুদ জয়সিংহের, দাদা রাজার, অপর্ণ এ বাড়িরই কোনো মেয়ে মনে নেই ঠিক । বালক বালিক, তাত। আর হাসি, বোধ হয় বিবি আর স্বরেন, তাও ঠিক মনে পড়ছে না । o এইখানে একটা ঘটনা আছে। রবিকাকাকে ও রকম উত্তেজিত হতে কখনো দেখি নি। এখন, রবিকাকা রঘুপতি সেজেছেন, জয়সিংহ তো বুকে ছোরা মেরে মরে গেল । স্টেজের এক পাশে ছিল কালীমূর্তি বেশ বড়ো, মাটি দিয়ে গড় । কথা ছিল রঘুপতি দূর দুর বলে কালীর মূর্তিকে ধাক্কা দিতেই, কালীর গায়ে দৃড়াদড়ি বাধা ছিল, আমরা নেপথ্য থেকে টেনে মূর্তি সরিয়ে নেব। কিন্তু রবিকাকা করলেন কী, উত্তেজনার মুখে দূর দূর বলে কালীর মূর্তিকে নিলেন একেবারে ছ হাতে তুলে। অত বড়ো মাটির মূর্তি ছ হাতে উপরে তুলে ধরে স্টেজের এক পাশ থেকে আর-এক পাশে হাটতে হাটতে একবার মাঝখানে এসে থেমে গেলেন। হাতে মূতি তখন কঁপিছে, আমরা তাবি কী হল রবিকাকার, এইবারে বুঝি পড়ে যান মূর্তিসমেত। তার পর উইংসের পাশে এসে মূর্তি আস্তে আস্তে নামিয়ে রাখলেন। তখনো রবিকাকার উত্তেজিত অবস্থা। জানো তো তাকে, অভিনয়ে কী রকম এক-এক সময়ে উত্তেজন হয় তার। আমরা জিজ্ঞেস করলুম, কী হল রবিকাকা তোমার। ওই অতবড়ো কালীমূর্তি ছ হাতে একেবারে তুলে নিলে ? উনি বললেন, কী জানি কী হল, ভাবলুম মূর্তিটাকে তুলে একবারে S8象