পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/১৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রঙ ওঠানো সে এক ব্যাপার। ভেসলিন তেল মেখে সাবান দিয়ে ঘষে ঘষে তার রঙ ওঠাতে হয়। আমার চুলে যে শাদা রঙ একটু-আধটু লাগিয়ে কাচপাক চুল করা হত তাই ধুয়ে পরিষ্কার করাই আমার পক্ষে অসম্ভব হত। আমি তো কালিঝুলি মাখ অবস্থায়ই এসে ঘুমিয়ে থাকতুম। কে আবার রাত্তির বেলা ওই বঞ্চাট করে। কিন্তু রবিকাকার তো তা হবার জো নেই। সেবার তপতী অভিনয় হবে — রবিকাকা সেজেছেন রাজা । সাজগোজ রবিকাকা বরাবর যতখানি পারেন নিজেই করতেন। পরে আমরা তাতে হাত লাগাতুম। তপতীর ড্রেস রিহার্সেল হবে। স্বরেন, রথী ওরা বাক্সভর্তি রঙ কালি এনেছে। রবিকাকা তা থেকে কয়েকট কালো রঙ তুলে নিয়ে ঢুকলেন ড্রেসিং রুমে। নিজেই দাড়ি কালো করবেন। খানিক বাদে বেরিয়ে এলেন মুখে গালে দাড়িতে কালিঝুলি মেখে। ছোটো ছেলে লিখতে গেলে যেমন হয়। আমি বললুম, রবিকাকা, এ করেছ কী"। রবিকাকা বললেন, কেন, দাড়ি বেশ কালো হয়েছে তো । আমি বললুম, দাড়ি কালে হবে বলে কি তোমার মুখও কালে হয়ে যাবে নাকি । এখন, রবিকাকা করেছেন কী, আচ্ছা করে গালের উপর কালো রঙ ঘষেছেন – তাতে দাড়ি কালো হয়েছে বটে, সঙ্গে সঙ্গে গালের চামড়া ও মুখের চার দিক কালো হয়ে অতি বিচ্ছিরি একটা ব্যাপার হল দেখতে। আমি বললুম, এ চলবে না – না-হয় শাদা দাড়ি থাকবে তাও ভালো, অল্প বয়সে কি লোকদের চুল পাকে না ? এ রাজারও অল্প বয়সেই চুল পেকেছে – তাতে হয়েছে কী। তা বলে তোমার মুখ কালো হয়ে যাবে – ও হবে না। প্রতিমাও বললে, রোজ এই রাত্তিরে জল ঘাটাঘাটি করে শেষে বাবামশায়ের একটা অমুখ-বিমুখ করবে। ড্রেস রিহার্সেল তো হল। রাত্তিরে শুয়ে শুয়ে ভাবছি কী করা যায়। সকালে উঠে প্রতিমাকে বললুম, তোর মেয়ের যে অনেক সময়ে মাথায় কালো রঙের গজের কাপড় দিস – তাই গজখানেক আন দেখি। ওই-ষে মেমসাহেবর চুল আটকাবার জন্যে পরে। পাতলা, অনেকটা চুলেরই মতো ጏõፃ