পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/১৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেখতে লাগে দূর থেকে । সেই কাপড় তো এল – আমি অভিনয়ের আগে রবিকাকাকে বললুম, তুমি আজ আর রঙ মেখে না দাড়িতে। আমি তোমার দাড়ি কালো করে দেব বলে, সেই কাপড় বেশ করে কেটে দাড়িতে গেলাপের মতো লাগিয়ে কানের দু-পাশে বেঁধে দিলুম। গোফেও ওই রকম করে খানিকটা কাপড় লাগিয়ে মুখের কাছটা কেটে দিলুম। সবাই বললে, কেমন হবে দেখতে। আমি বললুম, ভেবে না – স্টেজে আলো পড়লে এ ঠিকই দেখাবে। সত্যি, হলও তাই, স্টেজ থেকে যা দেখাল, সবাই অবাক । বললে এ চমৎকার কালে দাড়ি হয়েছে। রবিকাকারও আর কোনো বাঞ্চাট রইল না— অভিনয়ের পরে কাপড়ের গেলাপটি খুলে ফেললেই হল। বহুকাল অবধি ষ্টেজ সাজাবার ও অভিনয় যারা করবে তাদের সাজিয়ে দেবার কাজ আমাদের হাতেই ছিল – এখন না-হয় তোমরা নিয়েছ সে-সব কাজ। আর-একবার কী একটা অভিনয়ে – এই তোমাদের কালেরই ব্যাপার, ষাতে বাসুদেব তাণ্ডব নেচেছিল – সেই স্টেজেরই ঘটনা বলি" শোনো । বাসুদেবকে দেশ থেকে আনানো হয়েছিল তাণ্ডব নাচের জন্য। তার পর কী কারণে যেন তাকে নাকচ করে দেওয়া হয়। এখানে তো দলবল এসেছে অভিনয় হবে, স্টেজ তৈরি হল—মহাধুমধামে। স্টেজে রাজবাড়ির ফ্রণ্ট, হবে – খিলেন-টলেন দেওয়া, স্টেজ আকিটেক্ট স্বরেন শান্তিনিকেতন থেকেই কাঠের ফ্রেম তৈরি করে আনিয়ে ফিট-আপ করেছে। এখন তাতে কাপড় লাগিয়ে রঙ দেবে। নেপালের রাজা বোধ হয় সেবার অভিনয় দেখতে এসেছিলেন। আমি বললুম, করেছ কী । কাপড় লাগিয়েছ, ভিতর থেকে আলো দেখা স্বাবে যে ! কী করা যায় ! বললুম, দরম নিয়ে এসে । যেখান থেকে আলো দেখা যায় সেখানে দরম লাগিয়ে দেওয়ালুম। এখন কাপড়ে রঙ করবে কী করে। একদিনে কাপড়ে মাটি লাগিয়ে রঙ দিলে শুকোবে কেন। তখন আবার বর্ষাকাল – দিনরাত বৃষ্টি হচ্ছে । খানিক শুকোবে খানিক শুকোবে না – সে এক বিতিগিচ্ছি ব্যাপার হবে দেখতে । SWobr