পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/২৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

খাটাল ছিল, দেয়ালে নিজের স্থান দখল করে বসে থাকত, সেও যেন এক সভাসদ। সকাল-বিকেল আডিডার জায়গা ছিল ওই বারান্দা, চিরকাল দেখে এসেছি। গুড়গুড়ি ফরসি ইকো বৈঠকে সাজিয়ে দিত চাকররা। কাছারির কাজও চলত সেখানে, দেওয়ান আসত, আসত বয়স্ত, পারিষদ। গান, খোসগল্প, হাসি, কত কী হত। দেখেছি, ঈশ্বরবাবু নবীনবাবু ওঁর। যে যার জায়গায় হকে খাচ্ছেন, বাবামশায় আছেন ইজিচেয়ারে বসে, ড্রইংবোর্ড, কোলে প্ল্যান আঁকছেন । বারান্দায় জোড়া জোড়া থাম, তার মাঝে মাঝে বড়ো বড়ো খাটাল, পুত্বধারে একটা বড়ো খিলেন, পশ্চিমধারে তেমনি আর-একটা – সত্তর-আশি ফুট লম্ব, চওড়াও অনেকটা । ঈশ্বরবাৰু আসতেন রোজ সকালে লাঠি ঠকাস ঠকাস করতে করতে । হাতে রুমালে-বাধা কচি আম, কোনোদিন-বা আর-কিছু, যা নতুন বাজারে উঠেছে। বাজারে যে ঋতুতে যা-কিছু নতুন উঠবে এনে দিতে হবে, এই ছিল তার সঙ্গে বাবামশায়ের কথা । নিত্য যারা আসতেন আমদরবারে, তাদের কথা তো বলেইছি, অন্তর কেউ এলে তাদেরও বসানো হত ওখানে। আপিস যাবার আগে পর্যন্ত দক্ষিণের বারান্দায় তাদের দরবার বসত। তার পর দক্ষিণের বারান্দা খালি – যে যার বাড়ি চলে গেলেন, বাবামশায় উঠে এলেন, বিশ্বেশ্বর ফরসি গুড়গুড়ি তুলে নিলে । আমরা তখন চুকতুম সেখানে ; নবীনবাৰু হয়তো তখনে বসে আছেন, তাকে ধরতুম ফ্যান্সি ফেয়ারে নিয়ে যেতে হবে, ইডেন গার্ডেনে বেড়িয়ে জানতে হবে । বাবামশায়ের দরবারে আমাদের দরখাস্ত পেশ করতে হবে, তিনি হুকুম দেবেন তবে যেতে পারব। আমাদের হয়ে নবীনবাবুই সে কাজটা করতেন । পুজোর সময় দক্ষিণের বারান্দায় কত রকমের ভিড় । চীনেম্যান এল, জুতোর মাপ দিতে হবে। আমাদের ভাক পড়ত তখন দক্ষিণের বারান্দায়। খবরের কাগজ ভঁাজ করে সরু ফিতের মতো বানিয়ে চীনেম্যান পায়ের মাপ নিত, এখনো তার আঙ লগুলো দেখতে পাচ্ছি। দরজি এল, ঈশ্বরবাবু হাকলেন, "ওহে, ওস্তাগর এসেছে, এসে এসে ভাইসব, মাপ দিতে হবে গায়ের। ফিতে খুলে দাড়িয়ে দরজি ; মৃোটা পেট, গায়েশাদ জাম, মাথায় গম্বুজের মতে টুপি ; সে আমাদের পুতুলের মতো ঘুরিয়ে ফিরিয়ে মাপ নিয়ে ছেড়ে দিতে ঈশ্বরবাবুও ఇ\93 _