পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/২৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ধরলে। দেখি ঠিক যেন দুটি ছোটাে আমলকী। এত বড়ো মুক্তে দেখি নি কখনো । কোথায় পেল ? লোকটি মুক্তে দুটিকে শঙ্খমণি না কী মণি বলে, আর আমার চোখের সামনে নাড়ে। বল্ললুম, ‘বিক্রি করবে ? দাম চাইলে দুটোতে এক শো টাকা । মুক্তে কিনব, তা নিজে তে চিনি নে আসল নকল । বাড়িতে ফোন করে দিলাম জহুরী কিষণচাদকে বড়োবাজার থেকে খবর দিয়ে যেন আনিয়ে রাখে, আমি আসছি এখনি । ভুল হয়ে গেল গাড়িটার কথা বলতে । বাড়ির গাড়ি আসবে স্কুল ছুটি হলে । আমার আর ততক্ষণ সবুর সইছে না। একটা ঠিকে গাড়ি করেই রওনা হলুম সেই লোকটিকে নিয়ে। বাড়ি পৌঁছে দেখি কিষণগদও এসে উপস্থিত। কিষণচাদকে সেই মুক্তে দুটাে দেখালুম ; বললুম ‘দেখে তে, এক শো টাকা দাম চাইছে। বলে শঙ্খমণি, তা আসল কি নকল দেখে দাও, শেষে না ঠকি যেন ’ মনে পড়ল দাদা একবার পাহাড়ে এইরকম বড়ো মুক্তে কিনে খুব ঠকেছিলেন। মুক্তো কিনে কার কথা শুনে লেবুর রস দিয়ে যেই-না ধুয়েছেন— মুক্তোর উপরের এনামেল উঠে গিয়ে ভিতরের শাদা কাচ বেরিয়ে পড়ল, ঠিক যেন দুটি শাদা মার্বেল। বললুম, ‘দেখো কিষণচাদ, আমারও না আবার সেই অবস্থা হয় ? কিষণচাদ অনেকক্ষণ মুক্তে দুটি হাতে নিয়ে নেড়েচেড়ে দেখলে ; বললে, ঠিক বুঝতে পারছি নে ' আমারও মন খুত খুত করতে লাগল । যে কাজে মনে খুঁত থাকে তা নী করাই ভালো। আমি বললুম, থাকু কিষণচাদ, বুঝতে যখন পারছ না তুমি, এ ফেরত দিয়ে দেওয়াই ভালো । দরকার নেই রেখে এ জিনিস । মণি দুটো ফেরত দিয়ে দিলুম, সেই লোকটা চলে গেল । তার কিছুদিন পরে কাগজে দেখি, বিলেতের কোন এক বড়োলোকের মেমের একটা নেকলেস হারিয়েছে, বড়ো বড়ে মুক্তে ছিল তাতে । পরে বাড়ির ছেলেদের ডেকে বলি, ‘ওরে দেখ দেখ, ন রেখে ভালোই করেছি। কী জানি হয়তো সেই মুক্তোই এনেছিল বিক্রি করতে। শেসে চোরাই মাল রেখে মুশকিলে পড়তে হত হয়তো । লোকটার ঠিক চোর-চোর চেহারাই ছিল।’ আর্টস্ট হচ্ছে কলেক্টর, সে এটা ওঠা থেকে সংগ্রহ করে সারাক্ষণ, সংগ্রহেই তার আনন্দ । রবিক বলতেন, ‘যখন আমি চুপ করে বসে থাকি তখনই বেশি কাজ করি । তার মানে, তখন সংগ্রহের কাজ চলতে থাকে। চেয়ে আছি, ওই সবুজ রঙের মেহেদি বেড়ার উপর রোদ পড়েছে। মন সংগ্রহ ૨જીર