পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/২৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বারীন ঘোষকেও তাই বলেছিলুম। একদিন সে এল আমার কাছে, বললে, ছবি আঁকা শিখব আপনার কাছে।’ বললুম, “ত তে শিখবে, কিছু এ কেছ কি ? দেখাও না । সে একখানি দুর্গার ছবি দেখালে । বললে, ‘এইটি একেছি।’ - দুর্গার ছবি যেমন হয় তেমনি একেছে। বললুম, “ত, দুর্গ যে এ কেছ, কী করে অঁাকলে । সে বললে, ‘ধ্যানে বসে একটা রূপ ঠিক করে নিয়েছিলুম। পরে তাই অঁাকলুম। আমি বললুম, তা হবে না বারীন । ধ্যানে দেখলে চলবে না, চোখ খুলে দেখতে শেখে, তবেই ছবি অঁাকতে পারবে। যোগীর ধ্যান ও শিল্পীর ধ্যানে এইখানেই তফাত ।’ এই আকাশে মেঘ ভেসে যাচ্ছে ; কত রঙ, কত রূপ তার, কত ভাবে ভঙ্গিতে তার চলাচল । সেই ষেবারে অমুখে ভুগেছিলুম, হাটাহঁাটি বেশি করা বায়ণ, বেশির ভাগ সময় বারান্দায় ইজিচেয়ারে বসেই কাটিয়ে দিতুম চুপচাপ স্থির হয়ে, সামনে খোলা আকাশ–একমনে দেখতুম তা । সে সময়ে দেখেছি কত বৈচিত্র্য আকাশের গায়ের মেঘগুলিতে। কত রূপ দেখতে পেতুম তাতে—বাড়িঘর, বনজঙ্গল, পশুপাখি, নদীপাহাড়—ষেন মানসসরোবরের রূপ ভেসে উঠত চোখের সামনে। একবার মনে হয়েছিল এই মেঘেরই এক সেট ছবি অঁাকি। কত আলপনা ভেসে যাচ্ছে মেঘের গায়ে গায়ে । সেদিন একটি ছেলেকে দেখি ডিজাইন আঁকবে,"ত কাগজ সামনে নিয়ে উপরে কড়িকাঠের দিকে চেয়ে আছে। বললুম, ‘ওরে, উপরে কী দেখছিস । ডিজাইন কি কড়িকাঠে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলছে ? বাইরে আকাশের দিকে চেয়ে দেখ, কত ডিজাইনের ছড়াছড়ি সেখানে । তাও না হয়, কাগজের দিকেই চেয়ে থাকৃ। কড়িকাঠে কী পাবি ?’ কাগজের দিকে তাকিয়ে থাকলেও অনেক সময় অনেক জিনিস দেখা যায়। জাপানির তো যে কাগজে অঁাকবে সেই কাগজটি সামনে নিয়ে বসে দেথে ; তার পর তাতে অঁাকে । টাইৱানকে দেখতুম, ছবি আঁকবে, পাশে রঙ কালি গুলে তুলিটি হাতের কাছে রেখে ছবি আঁকবার কাগজটির সামনে দোজান্ত হয়ে বসল ভো হয়ে । একদৃষ্টি কাগজটি দেখল খানিক। তার পর এক সময় তুলিটি হাতে নিয়ে কালিতে ডুবিয়ে দু-চারটে লাইন টেনে ছেড়ে দিলে, হয়ে গেল একখানি ছবি। কাগজেই ছবিটি দেখতে পেত ; দু-এক লাইনে তা ফুটিয়ে দেখবার অপেক্ষা মাত্র থাকত । २b छ