পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

টিকিট আঁটা সেটার গায়ে। নাডু দিয়ে লোভ দেখাত মাটির হলেও নাডুগোপালটি। আর বিস্বাদ তেলের দু-তিন চামচ নিয়ে বসে থাকত নীল কাচের বোতলট । রঙিন টিকিট দিয়ে ভোলাতে চাইত, কিন্তু পারত না ! আর-একটা জিনিসকে দেখতে পাই— আনারপুরের জালি-কাপড়ে মোড় একটা মস্ত ঢাকনা । ছোটো বোন যখন ছোটো ছিল সে এই ঢাকনে পাখির মতে ঘুমের সময় চাপ পড়ত। যখন তাকে দেখেছি তখন সেটার কাজ গেছে। খালি ঢাকনাট। তখনো কিন্তু ঘরের পশ্চিম ধারে মস্ত একটা আলমারির চালে চড়ায়-বেধে-যাওয়া উলটোনো নৌকার ছইখানার মতো কীত হয়ে থাকে। ঘরের দক্ষিণ গায়ে দেখতে পাই তিনটে মোট মোটা পলতোলা থাম। অন্ধকারের পর্দার উপরে মাঝের থামটা থেকে একগাছ মশারির দড়ি ঝুলছে, তার গায়ে সারি সারি মাছি বসে গেছে— কালে কালে ফুলের কুঁড়ির মতে, নড়ে না চড়ে না । আমাuদর ঘরের পশ্চিম গায়ে আর-একট। ক্যাম্বিসের বেড়াঘের ঘর, চমৎকার করে সাজানে। মায়ের বসবার ঘর সেট। সেখানে প্রত্যেক জিনিসটি দেখতে পাচ্ছি স্পষ্ট স্পষ্ট— যেখানকার যা ধরা রয়েছে, সব ঠিকঠাক । আজও মনের মধ্যে রয়েছে— এই ঘরটার পুবদিকের দরজার কাছে একেবারে কাচের মতো পিছল কালে বানিশ মাখানে বাদামী টেবিল একটা পায়ে দাড়িয়ে । টেবিলের কিনারায় সোনালি পাড়, ঠিক মাঝে একটা পাহাড় আর সরোবরের ছবি লেখা। এই টেবিলের নীচে একটা কেমনতরে: কল ছিল, সেটাতে জোরে টান দিলেই টেবিলের উপরটা কাত হয়ে ফেলে দেয় বই, কাগজ, সেলায়ের বক্স, উলবোনার কাঠি ইত্যাদি টুকিটাকি ! এই টেবিলটার সামনে থাকে হলদে কাঠের ছোট্ট একখান চৌকি ফুলকাটা কাপে ট মোড়, ঠেলা দিলে সেটা হঠাৎ ভাজ হয়ে হাত-পা গুটিয়ে চ্যাপটা হয়ে পড়ে যায় মাটিতে। এই ঘরে থাকে কাঠির মতো সরু সরু পা একজোড় ইটালিয়ান কুকুর—কাচের পুতুলের মতো ছোট। কুকুর দুটো পাউরুটি, বিস্কুট, মুরগির ডিম খায়। আমার জন্যে পড়ে থাকে কোঁচের নীচে খালি ডিমের খোলাট। লুকিয়ে সেট। চিবিয়ে খেয়ে ধরা পড়ে যাই। হঠাৎ পিঠে পড়ে বেত, নীলমাধব ডাক্তারবাৰু এসে পরীক্ষা করেন আমাকে হাইড্রোফোবিয়া হয় কি না ; মা, পিসি, দাসী সবাই ছি ছি করতে থাকে ; বাবামশাই হুকুম দেন আমাকে মংলু মেথরের ३€