পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নকশা মেলে ধরেছে, আর একটা পালকের কলমের উলটো দিক নকশার উপরে টেনে টেনে কর্তা সাহেবকে বোঝাচ্ছেন, এ-দেশের নাচঘর,বৈঠকখানা, তাওখান প্রভৃতির সঠিক হিসেব। কর্তা বসে, সাহেব দাড়িয়ে । এখন হলে একটা মস্ত বেআদবি ঠেকত, কিন্তু তখন এইটেই ছিল চাল এবং চল । সাহেব-ইঞ্জিনিয়ার তখন লিখত নিজের নাম ইংরিজিতে কিন্তু নিজের পেশাট লেখা থাকত zoo &tself— «UNa ‘Mr George Edwards Eves' evo, ärts cost গৃহনির্ম্মাণকর্ত্তা' ! কর্তা ছিলেন ক্রোড়পতি ব্যবসায়ী সওদাগর এবং ঐশ্বর্যের সঙ্গে মানমর্যাদার ইয়ত্ত ছিল না কর্তার। সুতরাং তার খাশ মজলিসের স্থানট কেমনতরে হওয়া উচিত তা যেন সাহেব মিস্ত্রি বুঝে নিয়ে করেছিল সূত্রপাত এই তিনতলার ঘরটার । আলো, বাতাস, জাহাজ, ঘর—সমস্তকে একটা চমৎকার মতলবের মধ্যে সে ঘিরে নিয়ে বানিয়ে গেছে ! এই হল— ঐশ্বর্যের গৌরবের জোয়ারের চিহ্ন ধরে ধরে একতলা থেকে যখন উঠল ক্রমে আখি ফুট উপরে তখন পৃথিবীতে আমি নেই, কিন্তু শোন-কথার মধ্যে দিয়ে তখনকার ব্যাপার যেন স্পষ্ট দেখতে পাই !— কর্তার খাশ মজলিস বসেছে রাতের বেলা আমার থেকে চারপুরুষ পূর্বে এই হলটাতে— দক্ষিণের চল্লিশফুট ফালিঘরে পড়েছে সাহেবস্থবোর জন্যে রাত্রিভোজের টেবিল অনেকগুলো । টেবিলের উপবে চীনের বাসন থরেথরে সাজানো । সব বালনেই সোনার জল করা রঙিন ফুলের নকশা । প্রত্যেক বাসনে কর্তার নামের তিনটে অক্ষরের সোনালি ছাপ মারা । ঝকঝক করছে রুপোর সামাদানে মোমবাতি । খানসাম। সবাই জরি দেওয়া লাল বনাতের উর্দি-পর, কোমরে একখানা করে রুমাল । উত্তরের দিকে একটা বারান্দা— সেখানে আহারের পর আরামে বলে তামাক খাবার ব্যবস্থা রয়েছে— সেখানটাতে হু কোবরদার বড়ে বড়ো সোনরুপোর সর্টকাতে তামাক সেজে প্রস্তুত, বড়ে সিড়ির উপরে চোবদার খাড়া, আসাসোটা হাতে স্থির যেন পুতুল ! মানুষপ্রমাণ উচুতে থাম আর রেলিঙ -ঘেরা বড়ো হল— লোকলস্কর থেকে পৃথক-করা উচু জায়গাটা ঝাড়ে, লন্ঠনে, বাতির আলোয় জমজমাট। ঘরজোড়া প্রকাও একখানা গালিচা— ঘন লাল আর শাদা ফুলের কারিগরি তাতে ; ঘরের পুব-পশ্চিম দুটো বড়ে দেওয়ালে NBA