পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/৪২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

খুব খুশি, রবিকাক গল্প শুনতে চেয়েছেন, দু-বেলা এ বাড়িতে এসে গল্প বলে যান। সে কী আগ্রহ তার। বললেন, “যত পার নিয়ে নাও ; সময় আমারও বড়ো কম। কে জানত রবিকাকা আমার এই-সব গল্প শুনে এত খুশি হবেন।’ বলতে বলতে র্তার চোখ ছলছল করে উঠত। বেশি দিন গুরুদেবকে ছেড়ে থাকতে মন কেমন করছিল । দিন সাতেকে অনেকগুলো গল্প সংগ্রহ করে ফিরে এলুম শাস্তিনিকেতনে । আসবার সময় অবনীন্দ্রনাথ বললেন, “যাও এবারকার মতো এই গল্পগুলো নিয়েই। গিয়ে শোনাও রবিকাকাকে । ওঁর অমুস্থ শরীরে বেশি উৎসাহ আনন্দ দিতেও ভয় হয়—এই বুঝে লেখা ওঁকে শুনিয়ে। এই গল্পগুলো শুনে রোগশয্যায় যদি উনি মুহূর্তের জন্যও খুশি হন, সেই হবে আমার শ্রেষ্ঠ পুরস্কার।’ ফিরে এসে যখন গুরুদেবকে প্রণাম করতে গেলুম, প্রথমেই হাত বাড়িয়ে বললেন, ‘এবারে কী এনেছিস দেখি। সবগুলো লেখা একসঙ্গে দিলুম না, স্বদেশী যুগের গল্পটি দিলুম। তখনি পড়লেন—পড়বার সময়ে দেখেছি তার মুখ-চোখের ভাব, সে এক অপূর্ব দৃশু । মনে হচ্ছিল পড়তে পড়তে সে যুগে চলে গেছেন। সে-সময়কার নিজেকে যেন স্পষ্টরূপে দেখতে পাচ্ছিলেন। কখনো বললেন ‘অবন এতও মনে রেখেছে কী করে। কখনো-বা সহিসদের রাখী পরানোর দৃপ্ত চো৭ে১ সামনে ভেসে উঠতে হো হে করে হেসে উঠেছেন—‘কী কাণ্ড সব করেছি তখন ’ কখনো-বা মুখ গম্ভীর হয়ে উঠত ; বলতেন ‘ঠিকই বলেছে অবন, আমার মতের সঙ্গে ওঁদের মিলত না—আমার মত ছিল ও বিষয়ে সম্পূর্ণ আলাদা।" সেদিনের মতো সেই গল্পটি ওঁকে পড়তে দিয়ে অন্তগুলি ওঁর পাশে রেখে দিলুম—রোজ একটি দুটি করে পড়তেন । কী খুশি যে হয়েছিলেন সে যুগের কর্মী রবীন্দ্রনাথকে দেখতে পেয়ে। কয়দিন অবধি দেখতুম যেন সেই-সব স্বপ্নেই মগ্ন হয়ে আছেন। সবার সঙ্গে সেই-সব গল্পই করতেন । বলতেন, ‘এক-একটা যুগের এক-একটা মনোবৃত্তি ধরা পড়ে। তখন সেই স্বদেশী যুগে চার দিকে একটা উন্মত্ততা, বঙ্গভঙ্গের আন্দোলন । পি. এন. বাস বলতেন, রবিবাবু, এ যে হল, হয়ে গেল । অর্থাৎ দেশ-উদ্ধার হয়ে ፴e ፃ