পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/৪২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গেল। আমি বলতুম, হল বৈকি । তারপর গেল সেই যুগ, গেল সেই উন্মত্ততা । সিরিয়াস হয়ে গেলুম। এখানে চলে এলুম ; খোড়ে ঘর, গহনাপত্র নেই, গরিবের মতো বাস করতে লাগলুম। ‘কী সুন্দর অবন সেকালের-আমাকে তুলে ধরেছে। আমি কী ছিলুম। সবাই ভাবে আমি চিরকাল বাবুয়ানি করেই কাটিয়েছি, পায়ের উপর পা তুলে দিয়ে। কিন্তু কিসের ভিতর দিয়ে যে আমাকে আসতে হয়েছে, এ লেখাগুলোতে তা স্পষ্টরূপে ধরা পড়েছে। এটা তুই একটা খুব বড়ো কাজ করেছিস । আমার এত ভালো লাগছে, সব যেন চোখের উপরে ভাসছে । অবনরা সবাই আমার সঙ্গে কাজ করেছে—ভয়ে কেউ পিছিয়ে যায় নি । ওদের মধ্যে গগন ছিল খুব সাহসী। ‘আমি কখনো কারো স্বাধীনতার উপরে হস্তক্ষেপ করতে চাই নি । আমি বলতুম, বিলিতি জিনিস ষে চায় কিছুক, আমাদের উদ্দেশ্য তাদের বুঝিয়ে দেওয়া। দেখতুম তো তখন দেশী স্থতোয় কাপড় ভালো হত না। আমিও করিয়েছিলুম কাপড়, দেশী স্বতে আনিয়ে। তা, কেউ যদি বিলিতি কাপড় পরতে চায় বাধা দেব কেন । আমাদের কাজ ছিল লোকের স্বাধীনতায় বাধা না দিয়ে দেশের ভালোমন্দ অবস্থা বুঝিয়ে দেওয়া, লোকের প্রাণে-সেটি ঢুকিয়ে দেওয়া । তাই, যখন বিপিন পালরা বিলিতি জিনিস বয়কট করতে বললেন, আমি স্পষ্টই বললুম আমি এতে নেই। ‘কী কাজ করতুম তখন, পরিশ্রমের অস্ত ছিল না। রাত একটার সময়ে হয়তো "বিপিন পাল এসে উপস্থিত—অমুক জায়গায় পুলিস অত্যাচার করছে। স্বরেনদের পাঠিয়ে দিতুম। আমার ওই আর একটি ছিল স্বরেন, সে তো চলে গেল । ওকে আমিই মানুষ করেছিলুম, নির্ভয় করেছিলুম। বেপরোয় হয়ে চলতে শিখেছিল। ‘তখন, ভাবতে আশ্চর্য লাগে, কী নিঃশঙ্ক বেপরোয়া ভাবে কাজ করেছি। যা মাথায় ঢুকেছে করে গেছি—কোনো ভয়-ডর ছিল না । আশ্চর্য রূপ দিয়েছি, ছবির পর ছবি ফুটিয়ে গেছে অবন। সে একটা যুগ, আর তাদের রবিকাকা তার মধ্যে ভাসমান। আজ অবনের গল্পে সে কালটা যেন সজীব প্রাণবস্ত হয়ে ফুটে উঠল । আবার সে যুগে ফিরে গিয়ে নিজেকে দেখতে পাচ্ছি। 2ওইখানেই পরিপূর্ণ আমি। পরিপূর্ণ 8 eԵ