পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেখতে পারে, তিনিও বোধ হয় বলতে পারবেন না । কে দিল এই তাগিদ, কোখেকে এল এই স্বদেশী হুজুগ ! আমি এখনো ভাবি, এ একটা রহস্ত । বোধ হয় ভূমিকম্পের পরে একটা বিষম নাড়াচাড়া – সব ওলোটপালোট হয়ে গেল । বড়ো-ছোটো মুটে-মজুর সব যেন এক ধাক্কায় জেগে উঠল। তখনকার স্বদেশী যুগে এখনকার মতো মারামারি ঝগড়াঝাটি ছিল না। তখন স্বদেশীর একটা চমৎকার ঢেউ বয়ে গিয়েছিল দেশের উপর দিয়ে । এমন একটা ঢেউ যাতে দেশ উর্বর হতে পারত, ভাঙত না কিছু । সবাই দেশের জন্ত ভাবতে শুরু করলে – দেশকে নিজস্ব কিছু দিতে হবে, দেশের জন্য কিছু করতে হবে। আমাদের দলের পাগু ছিলেন রবিকাকা । আমরা সব একদিন জুতোর দোকান খুলে বসলুম। বাড়ির বুড়ে সরকার খুতখুত করতে লাগল, বলে, বাবুরা ওটা বাদ দিয়ে স্বদেশী করুন-ন – জুতোর দোকান খোলা, ও-সব কেন আবার । মস্ত সাইনবোর্ড টাঙানো হল দোকানের সামনে— ‘স্বদেশী ভাণ্ডার । ঠিক হল স্বদেশী জিনিস ছাড়া আর কিছু থাকবে না দোকানে বলু খুব খেটেছিল – নানা দেশ ঘুরে যেখানে যা স্বদেশী জিনিস পাওয়া যায় – মায় পায়ের আলতা থেকে মেয়েদের পায়ের জুতো সব-কিছু জোগাড় করেছিল, তার ওই শখ ছিল । পুরোদমে দোকান চলছে। শুধু কি দোকান – জায়গায় জায়গায় পল্লীসমিতি গঠন হচ্ছে o প্লেগ এল, সেবাসমিতি হল, তাতে সিস্টার নিবেদিতা এসে যোগ দিলেন । চারি দিক থেকে একটা সেলফ স্তাকৃরিফাইসের ও ৬২ স আত্মীয়তার ভাব এসেছিল সবার মনে । পশুপতিবাবুয় বাড়ি যাচ্ছি, মাতৃভাণ্ডার স্বষ্টি হবে – দ্যাশনাল ফণ্ড – টাকা তুলতে হবে । ঘোড়ার গাড়ির ছাদের উপর মস্ত টিনের ট্রাঙ্ক, তাতে সাদা রঙে বড়ো বড়ো অক্ষরে লেখা — মাতৃভাণ্ডার । সবাই চাদ দিলে – একদিনে প্রায় পঞ্চাশ-যাট হাজার টাকা উঠে গিয়েছিল মায়ের ভাণ্ডারে । অনেক সাহেবস্থবোও ব্যাপার দেখতে ছুটেছিল, তারাও টুপি উড়িয়ে বন্দেমাতরম্ রব তুলেছিল থেকে থেকে । তারা পুলিসের লোক কি খবরের কাগজের রিপোর্টার তা কে জানে । রামকেষ্টপুরের রেলের কুলির খবর দিলে, বাবুর যদি আসেন আমাদের কাছে তবে আমরাও টাকা দেব। আমরা রবিকাকা সবাই ছুটলুম। তখন ۹ و