পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পরিয়ে আবার কোলাকুলি, সহিসগুলো তে হতভম্ব, কাও দেখে । আসছি, হঠাৎ রবিকাকার খেয়াল গেল চিৎপুরের বড়ে মসজিদে গিয়ে সবাইকে রাধী পরাবেন। হুকুম হল, চলে সব। এইবারে বেগতিক— আমি ভাবলুম, গেলুম রে বাবা, মসজিদের ভিতরে গিয়ে মুসলমানদের রাখী পরালে একটা রক্তারক্তি ব্যাপার না হয়ে যায় না। তার উপর রবিকাকার খেয়াল, কোথা দিয়ে কোথায় যাবেন আর আমাকে স্থাটিয়ে মারবেন। আমি করলুম কী, আর উচ্চবাচ্য না করে যেই-না আমাদের গলির মোড়ে মিছিল পৌছানে, আমি সই করে একেবারে নিজের হাতার মধ্যে প্রবেশ করে হাফ ছেড়ে বাঁচলুম। রবিকাকার খেয়াল নেই— সোজা এগিয়েই চললেন মসজিদের দিকে, সঙ্গে ছিল দিল্প, স্বরেন, আরো সব ডাকাবুকে লোক । এ দিকে দীপুদাকে বাড়িতে এসে এই খবর দিলুম, বললুম, কী একটা কাও হয় দেখো । দীপুষ্ক বললেন, এই রে, দিকুও গেছে, দারোয়ান দারোয়ান, যা শিগগির, দেখ, কী হল— বলে মহা চেঁচামেচি লাগিয়ে দিলেন। আমরা সব বসে ভাবছি— এক ঘণ্টা কি দেড় ঘণ্টা বাদে রবিকাকারা সবাই ফিরে এলেন। আমরা স্বরেনকে দৌড়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করলুম, কী, কী হল সব তোমাদের। স্বরেন যেমন কেটে কেটে কথা বলে, বললে, কী আর হবে, গেলুম মসজিদের ভিতরে, মৌলবী-টৌলবী যাদের পেলুম হাতে রাখী পরিয়ে দিলুম। আমি বললুম, আর মারামারি । স্বরেন বললে, মারামারি কেন কুবে— ওরা একটু হাসলে মাত্র। যাকৃ. বাচা গেল। এখন হলে— এখন যাও তো দেখি, মসজিদের ভিতরে গিয়ে রাধী পরাও তো— একটা মাথা-ফাটফাটি কাগু হয়ে যাবে। তখন পুলিসের নজর যে কিছুই নেই আমাদের উপরে, তা নয়। একবার আমাদের উপরের দোতলার হলে একটা মিটিং হচ্ছে, রাখীবন্ধনের আগের দিন রাত্তিরে, উৎসবের কী করা হবে তার আলোচনা চলছিল। সেদিন ছিল বাড়িতে অরন্ধন, শাস্ত্র থেকে সব নেওয়া হয়েছিল তো ! মেয়ের সেবারে দেশ-বিদেশ থেকে ফোটা রাখী পাঠিয়েছিল রবিকাকাকে। হ্যা, মিটিং তো হচ্ছে— তাতে ছিলেন এক ডেপুটিবাৰু। আমাদের সে-সব মিটিঙে কারো আসবার বাধা ছিল না। খুব জোর মিটিং চলছে, এমন সময়ে দারোয়ান খবর দিলে, পুলিস সাহেব উপর আনে মাঙত । ጫቖ..