পাতা:অভাগীর স্বর্গ - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ওই যে রে-ও-গায়ে যে উঠে গেছে।-- কাঙালী বুঝিয়া কহিল, বাবাকে ? অভাগী চুপ করিয়া রহিল। কাঙালী বলিল, সে আসবে কেন মা ? অভাগীর নিজেরই যথেষ্ট সন্দেহ ছিল, তথাপি আস্তে আস্তে কহিল, গিয়ে বলবি, মা শুধু একটু তোমার পায়ের ধূলো চায় । সে তখনি যাইতে উদ্যুত হইলে সে তাহার হাতটা ধরিয়া ফেলিয়া বলিল, একটু কঁাদাকাটা করিস বাবা, বলিস মা যাচ্চে । একটু থামিয়া কহিল, ফেরবার পথে অমনি নাপতে্যু-বৌদির কাছ থেকে একটু আলতা চেয়ে আনিস ক্যাঙালী, আমার নাম করলেই সে দেবে। আমাকে বড় ভালবাসে । ভাল তাহাকে অনেকেই বাসিত । জ্বর হওয়া অবধি মায়ের মুখে এস এই কয়টা জিনিসের কথা এতবার এত রকম করিয়া শুনিয়াছে যে, সি সেইখান হইতে কঁাদিতে কঁাদিতে যাত্রা করিল। w ॥ b } পরদিন রসিক দুলে সময়মত যখন আসিয়া উপস্থিত হইল। তখন অভাগীর আর বড় জ্ঞান নাই । মুখের পরে মরণের ছায়া পড়িয়াছে, চোখের দৃষ্টি এ সংসারেব কাজ সারিয়া কোথায় কোন অজানা দেশে চলিয়া গেছে । কাঙালী কাদিয়া কহিল, মাগো ! বাবা এসেছে পায়ের ধূলো নেবে যে ! মা হয়ত বুঝিল, হয়ত বুঝিল না, হয়ত বা তাহার গভীর সঞ্চিত বাসনা সংস্কারের মত তাহার আচ্ছন্ন চেতনায় ঘা দিল। এই মৃত্যুপথযাত্রী তাহার অবশ্য বাহুখানি শয্যায় বাহিরে হাত পাতিল । রসিক হতবুদ্ধির মত দাড়াইয়া রহিল । পুথিবীতে তাহারও পায়ের ধূলার প্রয়োজন আছে, ইহাও কেহ নাকি চাহিতে পারে তাহার কল্পনার ܕܶ