পাতা:অভাগীর স্বর্গ - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

॥ पृङ्क्षे ॥ দ্বিতীয় পক্ষের তরুণী ভার্যার দেহ রক্ষার জন্য শিবচরণ কেবলমাত্র নিজের দেহ ভিন্ন আর সমস্ত দিতে পারিত । হরিলক্ষ্মীর সেই দেহ বেলপুরে সারিতে চাহিল না। ডাক্তার পরামর্শ দিলেন হাওয়া বদলাইবার । শিবচরণ সাড়ে-পািনর আনার মর্যাদামত ঘটা করিয়া হাওয়া বদলানোর আয়োজন করিল । যাত্রার শুভদিনে গ্রামের লোক ভাঙ্গিয়া পড়িল, আসিল না কেবল বিপিন ও তাহার স্ত্রী । বাহিরে শিবচরণ যাহা না বলিবার, তাহা বলিতে লাগিল এবং ভিতরে বড়পিসী উদাম হইয়া উঠিলেন। বাহিরেও ধুয়া ধরিবার লোকাভাব ঘটল না, অন্তঃপূরেও তেমনই পিসীমার চীৎকারের আয়তন বাড়াইতে যথেষ্ট স্ত্রীলোক জুটিল। কিছুই বলিল না। শুধু হরিলক্ষ্মী । মেজবীেয়ের প্রতি তাহার ক্ষোভ ও অভিমানের মাত্রা কাহারও অপেক্ষই কম ছিল না, সে মনে মনে বলিতে লাগিল, তাহার বর্বর স্বামী যত অন্যায়ই করিয়া থাক, সে নিজে ত কিছু করে নাই, কিন্তু ঘরের ও বাহিরের যে-সব মেয়েরা আজ চেচাইতেছিল, তাহদের সহিত কোন সূত্রেই কণ্ঠ মিলাইতে তাহার ঘুণ বোধ হইল। যাইবার পথে পালকির দরজা ফাক করিয়া লক্ষ্মী উৎসুক চক্ষুতে বিপিনের জীর্ণ গৃহের জানালার প্রতি চাহিয়া রহিল। কিন্তু কাহারও ছায়াটুকুও তাহার চোখে পড়িল না। কাশীতে বাড়ি ঠিক করা হইয়াছিল, তথাকার জলবাতাসের গুণে নষ্ট-স্বাস্থ্য ফিরিয়া পাইতে লক্ষ্মীর বিলম্ব হইল না, মাস-চ্যারেক পরে যখন সে ফিরিয়া আসিল, তাহার দেহের কান্তি দেখিয়া মেয়েদের গোপন ঈর্ষার অবধি রহিল না । হিম-ঋতু আগতপ্রায়, দুপুরবেলায় মেজবে চির রুগ্ন স্বামীর জন্য একটা পশমের গলাবন্ধ বুনিতেছিল, অনতিদূরে বসিয়া ছেলে খেলা করিতেছিল, সে-ই দেখিতে পাইয়া কলরব করিয়া উঠিল, মা, জ্যাঠাইমা । মা হাতের কাজ ফেলিয়া তাড়াতাড়ি একটা নমস্কার করিয়া লইয়া ܛ ܐ