পাতা:অভাগীর স্বর্গ - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গিয়া পড়িয়াছে। তাহার মুখে সমস্ত অল্পব্যঞ্জন তিতে বিষ হইয়া উঠিল এবং একনি গ্রাসও যেন গলা দিয়া গলিতে চাহিল না । পিসীমা কি একটা কাজে ক্ষণকালের জন্য বাহিরে গিয়াছিলেন, তিনি ফিরিয়া আসিয়া খাবারের অবস্থা দেখিয়া চঞ্চল হইয়া উঠিলেন। ডাক দিলেন, বিপিনের বেী ! বিপিনের বৌ ! বিপিনের বেী দ্বারের বাহিরে আসিয়া দাড়াইতেই তিনি ঝঙ্কার দিয়া উঠিলেন। তঁহার মুহুর্ত পূর্বের করুণা চক্ষুর নিমিষে কোথায় উবিয়া গেল। তীক্ষশ্বরে বলিয়া উঠিলেন, এমন তাচ্ছিল্য করে কাজ করলে ত চলবে না, বিপিনের বেী ! বীেমা একটা দানা মুখে দিতে পারলে না, এমনই রোধেছ ! ঘরের বাহির হইতে এই তিরস্কারের কোন উত্তর আসিল না, কিন্তু অপরের অপমানের ভারে লজ্জায় ও বেদনায় ঘরের মধ্যে হরিলক্ষীর মাথা ঠোঁট হইয়া গেল । পিসীমা পুনশ্চ কহিলেন, চাকরি করতে এসে জিনিসপত্র নষ্ট করে ফেললে চলবে না, বাছা, আরও পাঁচজনে যেমন করে কাজ করে, তোমাকেও তেমনই করতে হবে, তা বলে দিচ্চি । বিপিনের স্ত্রী এবার আস্তে আস্তে বলিল, প্রাণপণে সেই চেষ্টাই ত করি পিসীমা, আজ হয়ত কি-রকম হয়ে গেছে । এই বলিয়া সে নীচে চলিয়া গেলে, লক্ষ্মী উঠিয়া দাড়াইবামাত্র পিসীমা হায় হায় করিয়া উঠিলেন । লক্ষ্মী মৃদুকণ্ঠে কহিল, কেন দুঃখ করচ, পিসীমা, আমার দেহ ভাল নেই বলেই খেতে পারলাম না,-মেজবৌয়ের রান্নার ক্রটি ছিল না । হাত-মুখ ধুইয়া আসিয়া নিজের নির্জন ঘরের মধ্যে হরিলক্ষ্মীর যেন দম বন্ধ হইয়া আসিতে লাগিল। সর্বপ্রকার অপমান সহিয়াও বিপিনের স্ত্রীর হয়ত ইহার পরেও এই বাড়িতেই চাকরি করা চলিতে পারে, কিন্তু আজকের পরে গৃহিণীপনার পণ্ডশ্রম করিয়া তাহার নিজের দিন চলিবে কি করিয়া ? মেজবৌয়ের একটা সান্থন। তবুও বাকী আছে-তােহা S2}{?