পাতা:অভাগীর স্বর্গ - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মা বলিল, আমি যে চোখে দেখনু কাঙালী, বামুন-মা বথের উপরে স্বাসে । তেনার রাঙা পা-দুখানি যে সবাই চোখ মেলে দেখলে রে !! সবাই দেখলে ! সকবই দেখলে । কাঙালী মায়ের বুকে ঠেস দিয়া বসিয়া ভাবিতে লাগিল। মাকে বিশ্বাস করাই তাহার অভ্যাস, বিশ্বাস করিতেই সে শিশুকাল হইতে শিক্ষা করিয়াছে, সেই মা যখন বলিতেছে সবাই চোখ মেলিয়া এতবড় ব্যাপার দেখিয়াষ্ট্ৰে, তখন অবিশ্বাস করিবার আর কিছু নাই। খানিক পরে আস্তে আস্তে কহিল, তা হলে তুই ও তা মা সগ্যে যাবি ? বিন্দির মা সেদিন রাখালের পিসীকে বলতেছিল, ক্যাঙলার মার মত সতী-লক্ষ্মী আর দুলে পাড়ায় নেই । কঙালীর মা চুপ করিয়া রহিল, কাঙালী তেমনি ধীরে ধীরে কহিতে লাগিল, বাবা যখন ভোরে ছেড়ে দিলে, তখন তোরে কত লোকে ত নিকে করতে সাধাসাধি করলে। কিন্তু তুই বললি, না । বললি, ক}াঙালী বঁচিলে আমার দুঃখু ঘুচিবে, আবার নিকে করতে যাবে কিসের জন্যে ? হঠা মা, তুই নিকে করলে আমি কোথায় থাকতুম ? আমি হয়ত না। খেতে পেয়ে এতদিনে কবে মরে যৌতুম | ম। ছেলেকে দুই হাতে বুকে চাপিয়া ধরিল । বস্তুত, সেদিন তাহাকে এ পরামর্শ কম লোকে দেয় নাই, এবং যখন সে কিছুতেই রাজী হইল। না, তখন উৎপাত-উপদ্রবও তাহার প্রতি সামান্য হয় নাই, সেই কথা স্মরণ করিয়া অভাগীর চোখ দিয়া জল পড়িতে লাগিল । ছেলে হাত দিয়া মুছাইয়া দিয়া বলিল, কঁ্যাতাটা পেতে দেব মা, শুবি ? মা চুপ করিয়া রহিল। কাঙালী মাদুর পাতিল, কঁথা পাতিল, মাচার উপর হইতে ছোট বালিশটি পাড়িয়া দিয়া হাত ধরিয়া তাহাকে বিছানায় টানিয়া লইয়া যাইতে মা কহিল, কাঙালী, আজ তোর আর কাজে গিয়ে কাজ নেই । কাজ কামাই করিবার প্রস্তাব কাঙালীর খুব ভাল লাগিল, কিন্তু