পাতা:অভাগীর স্বর্গ - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কেন মা ? তোর হাতের আগুন যদি পাই বাবা, রামুন-মার মত আমিও সগো যেতে পাবো । কাঙালী অফুটে শুধু কহিল, যাঃ—বলতে নেই। মা সে কথা বোধ করি শুনিতেও পাইল না, তপ্তনিঃশ্বাস ফেলিয়া বলিতে লাগিল, ছোটজাত বলে তখন কিন্তু কেউ ঘেন্না করতে পারবে না-দুঃখী বলে কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না । ইস! ছেলের হাতের আগুন-রথকে যে আসতেই হবে । ছেলে মুখের উপর মুখ রাখ্রিয় ভগ্নকণ্ঠে কহিল, বলিস নে মা, বলিস নে, আমার বড় ভয় করে । মা কহিল, আর দেখা কাঙালী, তোর বাবাকে ধরে আনবি, আমনি যেন পায়ের ধূলো মাথায় দিয়ে আমাকে বিদায় দেয়। অমনি পায়ে আলতা, মাথায় সিদুর দিয়ে,-কিন্তু কে বা দেবে ; তুই দিবি, না রে ক্যাঙালী ? তুই আমার ছেলে, তুই আমাব মেয়ে, তুই আমার সব! বলিতে বলিতে সে ছেলেকে একেবারে বুকে চাপিয়া ধরিল ৷ । তিন । অভাগীর জীবন-নাট্যের শেষ অঙ্ক পরিসমাপ্ত হইতে চলিল। বিস্তৃতি বেশী নয়, সামান্যই । বোধ করি ত্রিশটা বৎসর আজও পার হইয়াছে কি হয় নাই, শেষও হইল তেমনি সামান্য ভাবে । গ্রামে কবিরাজ ছিল না, ভিন্ন গ্রামে ঊর্তাহার বাস । কাঙালী গিয়া কঁদকাটি করিল, হাতে-পায়ে পড়িল, শেষে ঘটি বাধা দিয়া তীহাকে একটাক প্রণামী দিল । তিনি আসিলেন না, গোটা-চারেক বাড়ি দিলেন । তাহার কত কি আয়োজন । খল, মধু আদার সত্ত্ব, তুলসীপাতার রস-কঙালীর মা ছেলের প্রতি রাগ করিয়া বলিল, কেন তুই আমাকে না বলে ঘটি বাধা দিতে গেলি বাবা ? হাত পাতিয়া বড়ি কয়টি গ্রহণ করিয়া মাথায় ঠেকাইয়া উনানে ফেলিয়া