পাতা:অভিযাত্রিক - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

अड्कािवाहिक আমরা আবার যখন পথে উঠলাম, তখন বেলা আড়াইটের কম নয়। শীতের বেলা, ঘণ্টা-দুই হাটবার পরে রোদ একেবারে পড়ে গেল । ডিস্ট্রিক্টবোর্ডের রাস্তা সোজা তীরের মতো নাকের সামনে বহুদূর পর্যন্ত চলে গিয়েচে । দু-ধারে ধূ-ধূ করাচে জনহীন প্রান্তর, ডাইনে অনেক দূরে মারফ। পাহাড় নীল মেঘের মতো দেখা যায়-সূর্য ক্রমে পাহাডের পেছনে অস্ত গেল । সন্ধ্যার অন্ধকার নেমে আসচে, তখনও রাস্তার দুধারে মাঠ আর মাঠ। আম্বিক। এদেশের লোক । তাকে বললুম-কোথায় থাকবে। রাত্রে হে ? গ্রামের চিহ্ন তো দেখচিনে অম্বিকা ও কিছু জানে না । সে এদিকে কখনো আসেনি। আবও কিছুদূর গিয়ে আমবাগানের আড়ালে একটা বস্তি দেখা গেল-কতকগুলো খোলার ঘর এক জায়গায় তাল পাকানো, এদেশের ধরনে । ঘোর অপরিস্কার । জিগ্যেস করে জানা গেল, বস্তির নাম রজাউন । এক জন লোককে বলা গেল এখানে রাত্রে থাকবার কোথাও একটু স্থান হবে কি না ; তারা বললে কাছারি-বাডিতে দুখানা চারপাই আছে, বিদেশী লোক এলে কাছারি-বাড়িতে থাকে । কাছারিবাডির অবস্থা দেখে আমরা পরস্পরের মুখের দিকে চাইলাম। ঘোডার আস্তাবলও এবি তুলনায় স্বৰ্গ । একটা ভাঙা খোলার ঘর, তার চাল পড়েচে ঝুলে, বাইরের দাওয়ায় দুখানা চারপায়া আছে বটে, কিন্তু তাতে শো ওয়া চলে না । কাছারি ঘরের মধ্যে এত জঞ্জাল যে সেখানে রাত্রিযাপনের চেষ্টা করলে সপাঘাত অবশ্যম্ভাবী । আমরা বললাম-আর কোথাও জায়গা নেই ? --না। বাবু নিজেদের তাই থাকবার জায়গা হয় না-গরিব লোকের বস্তি, আপনাদের জায়গা দেবে কোথায় ? পড়ে গেলাম বেজায় মুশকিলে । সন্ধ্যা হয়েচে, সপ্তমীর জ্যোৎসু)