পাতা:অভিযাত্রিক - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২১৪

R SR অভিযাত্রিক বেলা, এরই মধ্যে যেন বেশ বেলা পড়ে আসে আসে হ’ল, মনে হ’তে লাগলো সন্ধ্যা হবার আর বেশি দেরি নেই। কি করা যায় এ অবস্থায় ? রাত্রি কাটাতে হ’লে যতদূর বুঝচি, স্টেশন-মাস্টারের স্টেশনের ঘরখানার মধ্যে আমায় জায়গা দেবে না, এই বাইরের বেঞ্চিখানাতেই আমায় শুয়ে থাকতে হবে । এমন সময় দূরে বাজনা-বান্ব্যির শব্দ শোনা গেল। চেয়ে দেখি একদল লোক বাজনা বাজিয়ে স্টেশনের দিকে আসচে। কাছে এলে দেখলুম। তারা বরযাত্রী, দশ-বারো বছরের একটি বালক বরসাজে ডুলি চেপে এসেচে। ওদের সঙ্গে । আশ্বিন মাসে বিবাহ কি রকম ? এদেশে বোধহয় হয়ে থাকে । ওদের মধ্যে তিন-চারজন লোক এসে আমার বেঞ্চিতে বসলো । নিজেদের মধ্যে ওরা খুব গল্প-গুজব হল্লা করচে, একটা জিনিস লক্ষ্য করলাম-কেউ কোনো-রকম ধূমপান করচে না। পরের পয়সায় ধূমপান করবার এমন সুযোগ যখন বরযাত্রী হয়ে এরা ছেডে দিচ্চে তখন মনে হ’ল ধূমপানের প্রথা এদেশে কম। পরে জেনেছিলুম, আমার অনুমানের মধ্যে অনেকখানি সত্যতা আছে । কঁচা শালপাতা জােন্ডানে পিকা ছাড এদেশে বিদেশী চুরুট বা সিগারেটের চলন খুব কম। একজন আমার দিকে চেয়ে হিন্দিতে বললে, বাবু, কোথায় যাবেন ? বাবা । এতক্ষণ পরে মানুষেবা সঙ্গে কথা বলে বাচলুম। প্রাণ হাপিয়ে উঠেছিল কথা না বলে। বললুম, দারকেশা যাবে সে বিস্ময়ের সঙ্গে আমার দিকে চেয়ে বললে, দারকেশ ! আপনি কোন গাডিতে নেবেচোন ? কোথা থেকে আসচেন ? --সকালের গাড়িতে । কলকাতা থেকে আসচি --তবে এতক্ষণ বসে আছেন যে ? সব খুলে বললাম ; লোকটির চেহা বা ও পরিচ্ছদ দেখে খুব উচ্চবর্ণের