পাতা:অভিযাত্রিক - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

鲁$ অভিযাত্রিক তারপর আমাকে সে একটা টিনের বাংলো ঘরে নিয়ে গেল । বাংলেীম ভেতরটাতে কারা আছে তখন জানতুম না, বাইরের একসারি ছোট ঘরে অনেকগুলো জাহাজী মাল্লা বাসা করে আছে বলে মনে হ’ল । আমার হাতে তখন পয়সার সচ্ছলতা নেই, দরখাস্ত লিখতে ওরা আটখানা পারি।-- শ্রমিক দিলে, আমিও তা নিয়েছিলাম । দরখাস্ত লিখে চলে আসচি, এমন সময়ে সেই বৃদ্ধ মাল্লাটি বললে, বাবুং ওই বর্মী সাহেব আপনাকে ডাকিচে, ভেতরের ঘরে থাকে। ওরা । আমি অবাক হয়ে গেলুম। অপরিচিত স্থানে যেতে মন সরল না, কি জানি কার মনে কি আছে! কিছুক্ষণ পরে একটি বুদ্ধ বর্মী ভদ্রলোক আমায় হাসিমুখে বাকী চাটগাঁয়ের বুলিতে বললেন-আসুন বাবু, আপনাকে একটু দরকার আছে । যে ঘরে তিনি আমায় নিয়ে গেলেন, সে ঘরে তিন চারটি সুবেশ। তরুণী বসে ছিলেন, সকলেই দেখতে বেশ সুশ্রী । প্রত্যেকের সামনে একটা ছোট বাটি, তাতে সাদা মতো কি গুডো, একটু ঢুকেই চোখে পড়লো ; ভদ্রতা বিরুদ্ধ হয় বলে আমি আর ওঁদেব দিকে চাইনি । ভদ্রলোক আমায় বাংলায় বললেন-একটু চা খাবেন ? আমার বিস্মফের ভাব তখনও কাটেনি, আমি কোনো উত্তর দেবার আগেই মেয়ের ঘর থেকে বার হয়ে গেলেন । বুদ্ধ বললেন, আপনাকে ডেকেচি কেন বলি। আমি কাঠের ব্যবসা করি, বাজারে আমার কাঠের আড়ৎ আছে। একজন বাঙালী বাবু আমার আড়তে ইংরিজি চিঠি পত্র লিখতে আর আমার মেয়ে তিনটিকে ইংরিজি পড়াতো, সে চলে গিয়েচে আজ দুমাস । আর আসে না, চিঠি লিখলে জবাব দেয় না, অথচ আমার জরুরী চিঠি দু’তিন খানার উত্তর না দিলে নয় । আপনি মোবারক খালাসির দরখাস্ত লিখছিলেন শুনে আপনাকে ডাকালুম।