পাতা:অমর প্রেম - মানিক ভট্টাচার্য.pdf/১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অমর প্রেম ইচ্ছা সাহেবের ছিল না, তবে অনেক চেষ্টায় সাহেবকে বলে কয়ে রাজী করিয়াছি, কিন্তু কালই হাজির হইতে হইবে, নহিলে পাওয়া যাইবে না। নােহরের সমস্ত অন্তরাত্মা বিদ্রোহী হইয়া উঠিল। বি-এ পাশ করিয়া এত আশা ভরসার পর শেষে মাত্র ৩০ টাকার একটা চাকরি !– তাও মার্চেন্ট আফিসে ! আর এমন মার্চেন্ট আফিসে, যেখানে তাহার দাদা এন্টাস ফেল করিয়া ঢুকিয়া আজ ৬০ টাকা মাহিনা পাইতেছে। সে খুব জোরের সহিত লিল, আমি এ কাজ কিছুতেই কৰিব না। তাহার দাদা বলিল, বসিয়া থাকিলে যদি চলে অর্থাৎ নিশ্চিন্ত আহার পাওয়া যায় লােকে কেন খাটিতে চাহিবে ? কথাটা অনেকটা সাধারণভাবেই বলা হইয়াছিল ; কিন্তু মনােহর, কথাটা বিশেষভাবেই প্রযুক্ত বলিয়া মনে করিল। এই লইয়া দুই ভাইয়ের মধ্যে বেশ একটু মন কষাকসি হইয়া গিয়াছিল। এমন সময় মুহরের একটি কন্যা জন্মগ্রহণ করিল। ইহার কিছু পরেই মুহরের পিতার মৃত্যু হইল। শ্রাদ্ধাদির মাস কয়েক মধ্যে সহজেই প্রতীয়মান হইল যে, পিতার মৃত্যুতে সংসারের আয় কমিয়াছে এবং কন্যার জন্মগ্রহণে কিছু খরচ বাড়িয়াছে এবং ভবিষ্যতে আরও বাড়ির সম্ভাবনা হইয়াছে। বধু হইয়া আসিয়া অবধি সুহাসিনীকে যায়ের সঙ্গে সমান করিয়া সংসারের কাজ করিতে হইত। আজকাল তাহার একটু বেশী কাজই পড়িল। স্বামীর বেকার অবস্থা ও শ্বশুরের মৃত্যুর ইহা অবশ্যম্ভাবী ফল ভাবিয়া—মুখ বুজিয়া সুহাসিনী সে সব কাজ করিয়া মাইতে লাগিল। তথাপি মাঝে মাঝে অগ্ন্যুৎপাত হইতে লাগিল। এইভাবে দুই বৎসর কাটিয়া যাইবার পর কঁচড়াপাড়ার স্কুলে একটি শিক্ষকের পদ খালি হইল। তখনকার হেডমাষ্টারের ঐ স্কুলেই সে ছাত্র ছিল ; তদুপরি সে স্থানীয় পােক বলিয়া তাহাকেই নিযুক্ত করা হইল।