পাতা:অমর প্রেম - মানিক ভট্টাচার্য.pdf/৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪৮ অমর প্রেম সময়টুকু মূল্য দিয়া ক্রয় করিবে কে? এ সমস্ত দুঃখের মূলে অভাব দূর হইলেই দুঃখ আর থাকিবে না। স্নেহ প্রেম কিছুই তাে সংসারে কম ছিল না। কিন্তু অভাব আসিয়া যে ধীরে ধীরে সমস্ত গ্রাস করিয়া ফেলিল। এ অভাব কি ভাগ্যের মত শাশ্বত ও অমােঘ হইয়া রহিয়া ৰাইবে, না মেঘের মত একদিন কাটিয়া যাইবে ! তাহার জীবদ্দশায় না হউক মরণের পরও যদি এ অভাব দূর হয় তাহা হইলেও তাঁহার ক্ষোভ নাই। কিন্তু তাহাই কি যাইবে ? যাউক্ না যাউ এ চেষ্টার ত্রুটি তিনি করিবেন না। জীবনের শেষ ক্ষণ পর্যন্ত এ চেষ্টা তিনি ছাড়িবেন । দুঃখের জন্য দুঃখ করিবেন না। দুঃখ তত জীবন ভাের। জীবন! সে তত আর নূতন কিছু নয়, মরণের দুয়ারে পৌছিবার সময়টুকু মাত্র। একটা দিন কাটানাে মানে মরণের দিকে একটি দিন আগাইয়া যাওয়া মাত্র। তখন আর ভয় কিসের? হঠাৎ সুহাসিনীর ডাকে চমক ভাঙ্গিল--রাত ১২টা বাজে সে হুস আছে। এখন দুটো খাও, খেয়ে আমাকে ছুটি দাও। আমারও তাে মানুষের শরীর, লােহার নয় যে ২৪ ঘণ্টা সমান বইবে। কথাগুলাে তীক্ষ্ণ কণ্ঠেই সুহাসিনী বলিয়াছিল। মনােহর আর একবার আকাশের পানে চাহিয়া গৃহমধ্যে আসিলেন। সেখানেই খাবার দেওয়া হইয়াছিল, একটা দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া মনােহর খাইতে বসিলেন। পাঠরতা লতিকারও চমক ভাঙ্গিল। সেও বই বন্ধ করিয়া ভাইকে ভাল করিয়া শােয়াইয়া দিয়া উঠিয়া আসিল। লতিকা আসিতেই সুহাসিনী বলিল-পড়া শেষ হ’ল এতক্ষণে ? এখন যাও একটিবার রান্নাঘরে। ভাত বেড়ে নিয়ে খেতে বসগে। লতিকা চলিয়া গেল। আহার্যের সমুখে পিলসুজের ওপর একটি প্রদীপ জ্বলিতেছিল।