পাতা:অমর প্রেম - মানিক ভট্টাচার্য.pdf/৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪৯ অমর প্রেম মনােহর গায়ের জামা খুলিয়া খাইতে বসিয়াছিল। সুহাসিনীর চক্ষু হঠাৎ স্বামীর মুখের উপর নিবদ্ধ হইল। কি শীর্ণ সে দেহ হইয়া গিয়াছে। প্রায় চেনা যায় না। অধর মলিন হইয়া গিয়াছে। নাসিকা অসির মত উঁচু হইয়া আছে। দুই পাশের হাড় উচু হইয়া আছে। যেন সে মনােহর নয়। পূর্বের সেই স্বাস্থ্য, সেই সৌন্দর্য যেন কোথায় চিরবিদায় লইতে বসিয়াছে! | তা হইবে না? এত পরিশ্রমে মানুষের শরীর টিকে? রাত্রে একটু বিশ্রাম ছিল। সেটুকুও গিয়াছে। মাসিক দশ টাকার জন্য সে বিশ্রামটুকু নষ্ট করে শরীরকে এমন করিয়া কষ্ট দেয়। সাধে কি সুহাসিনী রাগ করে! ১০ টাকার জায়গায় যদি ৫০ টাকা ঐ বিশ্রামের পরিবর্তে স্বামী আনিয়া দিতেন, তবু সুহাসিনীর রাগ তাহাতে কমিত না। স্বামী তাে সেটুকু বুঝেন না তাই তাে তাহার দুঃখ। হঠাৎ মনােহর আহার শেষ করিয়া জলের গ্লাসে হাত দিতে সুহাঙ্গিনী বলিল,-ওকি খাওয়ার ছিরি হচ্ছে দিন দিন। সব যে পাতে পড়ে রইল। আর দুটো খাও। এম্‌নি করে শরীর কতদিন বইবে শুনি? জানত দুঃখীর শরীর না বইলে চলে না—বইতেই হবে, বলিয়া মনােহর উঠিয়া পড়িলেন। তারপর হাত মুখ ধুইয়া কক্ষে আসিয়া ইতিহাসের পাণ্ডুলিপির খাতা লইয়া বসিলেন। সুহাসিনী খানিকটা উদাস দৃষ্টিতে চাহিয়া রহিল। তারপর উচ্ছিষ্টাদি কুড়াইয়া থালা উঠাইয়া যখন বাহিরে আসিল তখন তাহার দুই চোখ দি টপ টপ করিয়া অশ্রু ঝরিতেছে আর অন্তরের মধ্যে অভিমানের শৰল টিকা বহিতেছে।