পাতা:অমর প্রেম - মানিক ভট্টাচার্য.pdf/৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૧ অমর প্রেম আনন্দের ভাগ কাহাকেও দিবার জন্য তাহার অন্তর ব্যাকুল হইয়া উঠিল, তিনি গৃহমধ্যে আসিলেন। চারিদিক নিস্তব্ধ। বামদিকের শয্যার উপর শিশুপুত্রকে কোলের কাছে লইয়া সুহাসিনী ঘুমাইয়া। শয্যার দিকে চাহিতেই সুহাসিনীর অশ্রু লাঙ্কিত ম্লান মুখ মনােহরের চক্ষে পড়িল। হঠাৎ কে যেন অন্তর হইতে বলিল, এই অভাগিনী নারীর যৌবনাবধি আজ পর্যন্ত কি কষ্টে কাটিয়াছে তাহার কোন সংবাদ রাখ ? ইহার মুখের কঠিন ভাষাকেই চিরকাল বড় করিয়া দেখিয়াছ ; অন্তরের দুঃখ সমুদ্রের পানে তাে কোন দিন ফিরিয়াও চাও নাই। অনুশােচনায় মনােহরের অন্তর ভরিয়া গেল। হঠাৎ বক্ষের বাম দিকে একটি অতি তীব্র বেদনা বােধ হইল। মনে হইল, এই বুঝি তাহার শেষক্ষণ। তাহাই কি ? যদি তাই হয়, আজিকার উচ্চারিত প্রেমহীন কঠোর বাণীই কি সুহাসিনীর প্রতি প্রযুক্ত শেষ বাণী হইবে ? তাহা হইলে কি তাহার অবলম্বন হইবে? কি লইয়া সে থাকিবে ? যদি আজই এইক্ষণে চিরকালের মত চলিয়া যাইতে হয়, যে চিরদিন-চিররাত্রি তাহার সঙ্গে শুধু দুঃখ ভােগই করিয়া আসিয়াছে তাহার সান্ত্বনার জন্য কি রাখিয়া যাইবেন? বাম হাতে ব্যথিত স্থানটিকে টিপিয়া ধরিয়া দক্ষিণ হাত দিয়া খাতা হইতে একখানি সাদা পাতা ছিড়িয়া মনােহর প্রাণপণ চেষ্টায় লিখিলেন সুহাসিনী, আমাকে ক্ষমা করিও। রাগ করিয়া যাহা বলিয়াছি তাহা আমার অন্তরের কথা নহে। তােমার নিঃস্বার্থ প্রেমপূর্ণ হৃদয় আমি জানি। আজ শেষক্ষণ তােমার মধুর হৃদয়ের অন্তস্তল পর্যন্ত আমি দেখিতে পাইতেছি।