পাতা:অরক্ষণীয়া - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অরক্ষণীয়া SR দুর্গামণি ধীরে ধীরে বলিলেন, না দিদি, আমার আবার মানঅভিমান কি ! স্বর্ণ দেওরকে বঁ হাত দিয়া পিছনে ঠেলিয়া নিজে অগ্রসর হইয়া আসিয়া কহিলেন, তোমাকে মন্দ কথা ত আমি বলিনি মেজবৌ যে, অমন করে চিবিয়ে চিবিয়ে কথাগুলি বললে ? তা রাগই কর, আর ঝালই কর বাপু -তোমার ঐ ডানাকাটা পরীর বিয়ে দিতে আমরা পারব না । মেয়ে তা ঐ ছোটবোটাও পেটে ধরেছে। কেউ একবার বাছাদের মুখপানে চেয়ে দেখলে আবার নাকি সে চোখ ফিরিয়ে চলে যাবে !! তা সত্যি কথা বলব মেজবৌ-যেমন তোমার মেয়ের ছিরি, তেমনি গিয়ে হরিপালে পোড়ে-হোড়ে থেকে যা হোক একটা চাষা-ভুষো ধরে দাও গো-ন্যাটা চুকে যাক। শুনেচি নাকি সেখানকার লোক সুচ্চিারি-কৃচ্ছিরি দেখে না-মেয়ে হলেই হ’ল । দুর্গামণি চুপ করিয়া রহিলেন। যে বিষের জ্বালায় একদিন র্তাহারা পৃথক হইয়াছিলেন, সেই বিষদন্ত পুনরায় উদ্যত দেখিয়া তিনি ভয়ে কাঠ হইয়া গেলেন। স্বর্ণ কহিলেন, যার যেমন । তোমাকে কেউ ত নিন্দে করতে পারবে না। হ্যা, পারে বটে বলতে আমাকে । তিনটে পাশের কম যদি জামাই ঘরে আনি, দেশসুদ্ধ একটা টি-টি পড়ে যাবে। সবাই বলবে-এটা করলে কি ! অত বড় একটা জ্যাঠাই ঘরে থাকতে কি-না দুৰ্গাপ্রতিমে জলে ভাসিয়ে দিলে। সত্যি কি না। বল ঠাকুরপো ? বলিয়া স্বর্ণ অনাথের প্রতি কটাক্ষ করিলেন। তাই বই কি ! বলিয়া অনাথ তাহার মহামান্য বড়ভাজের মর্যাদা রাখিয়া অফিসের বেলা হওয়ার অছিলায় প্রস্থান করিল। স্বর্ণ বলিলেন, তোমার ভাইকে ধরে-করে যা হোক একটা ধরেপাকড়ে দাওগে । তাতে তোমার লজ্জা নেই মেজবৌ, কেউ নিন্দে করতে পারবে না। তিরিশটি টাকা ত সবে মাইনে ছিল ; কেই বা তাকে জানত, আর কেই বা চিনত। এদের ভাই বলে যা লোকে