পাতা:অরক্ষণীয়া - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অরক্ষণীয়া R 8 জ্ঞানদা মনে মনে অতুলের শেষ কথাগুলো মিলাইয়া লইয়া নীরবে পড়িয়া রহিল। সে-রাত্রে সে একবারও ঘুমাইতে পারিল না, মায়েব বুকেবা কাছে মুখ রাখিয়া বারংবার চমকাইয়া উঠিতে লাগিল। এমনি করিয়া প্রভাত হইল। নূতন স্থানে নূতন আলো চোখে পড়ায় বিন্দুমাত্রও তাহাব আনন্দোদয় হইল না।-- বরঞ্চ সমস্ত আবহাওয়া, আলো, বাতাস যেন কালকের চেয়েও বেশি করিয়া তাহাকে চাপিয়া ধরিল । এতবড় আইবুড়া মেয়ে দেখিয়া পাড়ার লোক ভয়ানক আশ্চম হইয়া গেল। আমাদের বাঙ্গলাদেশে অনুঢ়া মেয়ের বয়স ঠিক করিযী। বলার রীতি নাই। সবাই জানে, বাপ-মাকে দু-এক বছর হাতে রাখিয়া বলিতে হয়। সুতরাং দুর্গা যখন বলিলেন তের, তখন সবাই বুঝিল পনির । তা ছাড়া একমাত্র সন্তান বলিয়া নিজেরা না খাইয়া মেয়েকে খাওয়াইয়াছিলেন, পরাইয়াছিলেন-সেই নিটোল স্বাস্থ্যই এখন আবি ও কাল হইল-জ্ঞানদার যথার্থ বয়সের বিরুদ্ধে ইহাই বেশি কবিয়া সাক্ষ্য দিতে লাগিল । দুই দিন না। যাইতেই শান্তু কথা-প্রসঙ্গে ভগিনীকে কহিলেন, মেয়েটােব জন্যে তা পাড়ায় মুখ দেখানো ভার হয়েছে। একটি ভারি সুপিাত্র হাতে আছে ; দিবি ? দুৰ্গা বলিলেন, জামাই আমার স্থির হয়ে আছে-আর কোথাও হতে পারে না । শাস্তু বলিলেন, তা হলে ত কথাই নেই। কিন্তু এমন সুপাত্র বড় ভাগ্যে মেলে তা বলে দিচ্চি। কুড়ি-পঁচিশ বিঘে ব্রহ্মত্র, পুকুব, বাগান, ধানের গোলা-লেখাপড়াতেও দুৰ্গা কথাটা শেষ করিতে না দিয়াই বলিলেন, না দাদা, আব কোথাও হবার (জা নেই-এই বছরটা বাদে সেখানেই আমাকে বিয়ে দিতে হবে । শন্তু বলিলেন, কিন্তু আমার বিবেচনায়-এই সামনের অভ্রণেই মেয়ে উচ্ছগু্য করা কর্তব্য হয়েছে।