পাতা:অরক্ষণীয়া - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অরক্ষণীয়া و في মেয়ে চুপ করিয়া রহিল, জবাব দিল না। দাদার বৌয়ের সহিত দুৰ্গা এ পর্যন্ত কোন প্রকার ঘনিষ্ঠতার চেষ্টা করেন নাই। শুধু যে তাহার বিকট চেহারা ও ততোধিক বিকট হাসি দেখিলেই তঁহার গা জ্বলিয়া যাইত তাহা নহে, তাহার অতি কর্কশ কণ্ঠস্ববও তিনি সহ্য করিতে পারিতেন না। পাড়াগায়ের মেয়েব স্বভাবতঃই একটি উচ্চকণ্ঠে কথা কহে ; কিন্তু বৌয়ের কথাবার্তা একটি দুব হইতে শুনিলে ঝগড বলিয়া মনে হইত। তাহার উপর সে যেমন মুখরা, তেমনি যুদ্ধবিশারদ। কিন্তু তাহার একটা গুণ দুর্গ টের পাইয়াছিলেন-সে গায়ে পড়িয়া ঝগড়া করিতে চাহিত না । তাব গন্তব্য পথ ছাড়িয়া দিলে সে কাহাকেও কিছু বলিত না-ছেলে-পুলে ঘর-সংসার লইয়াই থাকিত, পরের কথায় কান দিত না । প্রথমেই আসিয়া দুৰ্গা একদিন তাহান্স বান্নাবান্নার সাহায্য করিতে গিয়াছিলেন। তাহাতে সে স্পষ্ট কবিয়া বলিয়াছিল-তুমি দু’দিনেব জন্য এসেচ ঠাকুবঝি, তোমাকে কাজ করতে হবে না। আমি রান্নাঘব, ভঁড়ার ঘব কাউকে দিতে পারব না। সেই অবধি দুৰ্গা এ-বিষয়ে একপ্রকার নিশ্চিন্ত হইয়াছিলেন। আজ বেলা দেখিয়া বেী দোরগোড়ায় আসিয়া স্বাভাবিক চীৎকারশব্দে প্রশ্ন করিল, আজ খাওয়া-দাওয়া কি হবে না ঠাকুরবি ? হেঁসেল নিয়ে বসে থাকিব ? দুৰ্গা মুখ তুলিয়া বলিলেন, মেয়েটার ভারী জর হয়েচে বৌ, তোমরা থাও গে, আমরা আজ আর কেউ খাবো না । বৌ কহিল, মেয়ের জ্বর, তা তোমার কি হল গো ? জ্বর আবার কার না হয় ? নাও, উঠে এসে । দুৰ্গা কাতরকণ্ঠে কহিলেন, না বৌ, আমাকে খেতে বলে না-মেয়ে ফেলে আমি মুখে ভাত তুলতে পারব না। তোমাদের সব আদিখ্যেতা, বলিয়া বৌ চলিয়া গেল। রান্নাঘর