পাতা:অরক্ষণীয়া - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অরক্ষণীয়া లి দুৰ্গা একটু সকাল সকাল বাড়ি ফিরিয়া মেয়ের ঘরে ঢুকিয়া প্রথমেই প্রশ্ন করিলেন, হাঁ রে জ্ঞানদা, কোন চিঠিপত্র দিয়ে গেছে কি ? মেয়ে কুষ্ঠিতম্বরে কহিল, না মা । আজি দুই মাস হইতে উপযুপরি তিনখানি পত্রের জবাব আসিতেছে না। দুর্গা সংশয় ক্ষুব্ধ-কণ্ঠে কহিলেন, তুই হয়ত ঘুমিয়ে পড়েছিলি। তোর সাড়া না পেয়ে দাশু হয়ত ফিরে গেছে। আমি বাড়িতে নেই, একদিন একটুখানি কি জেগে থাকতে পারিস নে বাছ ?—বলিয়া দুৰ্গা মুখ ভার করিয়া চলিয়া গেলেন। জ্ঞানদা চুপ করিয়া রহিল। সে ঘুমায় নাই, জাগিয়াছিল বলিয়া তর্ক করিল না। মায়ের কাছে প্রত্যহ একই প্রশ্নেব একই উত্তর দিতে সে নিজের লজ্জায় নিজেই মাটির সঙ্গে মিশিয়া যাইতেছিল। দুৰ্গা তৎক্ষণাৎ ফিরিয়া আসিয়া দ্বারের বাহির হইতে কহিলেন, কেন, দাশু যে আমাকে বললে সে খুজে এনে দিয়ে যাবে ? আজি কেমন করিয়া যেন তঁহার নিশ্চয় বিশ্বাস হইয়াছিল, অতুলের চিঠিপত্র डांजिशां7छछे । মেয়ে কথা কহিল না-একটা মলিন কঁথার মধ্যে মুখ লুকাইয়। পড়িয়া রহিল। কিন্তু দুৰ্গা এইখানেই থামিতে পারিলেন না। তিনি ভ্রাতুপুত্রকে পোষ্টফিসে পঠাইয়া খবর লইয়া জানিলেন, দাশু আসে নাই। পরের তিন-চারি দিন তিনি পত্রের প্রত্যাশায় অহোরাত্র যেন কণ্টকশয্যায় বসিয়া কাটাইলেন, তথাপি কিছু আসিল না। অবশেষে হতাশ হইয়া অতুলের জননীকে চিঠি লিখিলেন। তিনি প্রত্যুত্তরে সংক্ষেপে জানাইলেন, অতুল ভাল আছে এবং কলিকাতার বাসায় থাকিয়া পূর্ববৎ লেখাপড়া করিতেছে। তঁহার চিঠির মধ্যে একটা তাচ্ছিল্যের সুরই যেন দুর্গার কানে বাজিল। এমনি করিয়া অভ্রান গেল, পৌষ গেল, কিন্তু অতুলের চিঠি আসিল না। মাঘের মাঝামাঝি মেয়ে যদিবা একটু সারিয়া উঠিল, মা অসুখে পড়িলেন। এতবড় নিরাশার