পাতা:অরক্ষণীয়া - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অরক্ষণীয়া (ტტ আঘাত তিনি সহ্যু করিতে পারিলেন না । তা ছাড়া বৌয়ের প্রতি তাহার বিদ্বেষের আর অন্ত ছিল না । তাহার উল্লেখ করিতে হইলেই, ঘুণাভরে কখনো বা “পোড়া কাঠ’ কখনো বা “তাড়কা’ বলিতেন, এবং যত দিন যাইতে লাগিল, ঘূণা যেন অপরিসীম হইয়া উঠিতে লাগিল। তাহার আরও একটা কারণ এই ছিল-“পোড়া কাঠ নিজের ধরনে জ্ঞানদাকে তাহার স্বাভাবিক মাধুর্যের জন্যই বোধ করি ভালবাসিয়াছিল, যন্ত্রও করিত। কিন্তু এই যত্নের মধ্যে একটা উৎকট স্বার্থের গন্ধ পাইয়া দুর্গা বিষের জ্বালায় জ্বলিতে লাগিলেন। বড় দুঃখের দেহ, তাই অনেক সহিয়াছিল, কিন্তু আর সহিল না । মাঘের শেষে তিনি শয্যা আশ্রয় করিলেন । মেয়ে কঁাদিয়া বলিল, আর না মা, এইবার বাড়ি চল । যা হবার, সেইখানেই হোক । দুর্গ। রাজী হইলেন। তঁহার সম্মতির এখন আর বিশেষ কোন কারণ ছিল না ; শুধু এই “পোড়াকাঠে’র যত্ন ও আত্মীয়তা হইতে বাহির হইবার জন্যই মন যেন তঁহার অহরহ পালাই পালাই করিতে লাগিল । যাত্রার উদ্যোগ হইতেছে শুনিয়া শাস্তু বাকিয়া বসিলেন। তখন সকাল সাতটা-আটাটা, শান্তু সন্ধ্যা-আহ্নিক সারিয়া খটখট শব্দে বাহিরে আসিয়া ডাকিলেন, দুৰ্গা ! দুৰ্গা দাওয়ার একপ্রান্তে খুটি ঠেস দিয়া মুখ ধুইতেছিলেন। জ্ঞানদা কাছে বসিয়া সাহায্য করিতেছিল। দাদার আহবানে দুৰ্গা जांgा निष्ठान । শাস্তু কহিলেন, এখন ত তোমার যাওয়া হতে পারে না। কেন দাদা ? কেন দাদা ! আমি কি তোমার জন্যে কথা দিয়ে মিথ্যাবাদী হব নাকি ? সে জন্ম আমার নয়। কথাটা না জানিয়াও দুর্গার বুকের ভিতরে তোলপাড় করিতে লাগিল। মৃদুকণ্ঠে জিজ্ঞাসা করিলেন, কিসের কথা দাদা ? \S)