পাতা:অরক্ষণীয়া - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

&&ጋ অরক্ষণীয়৷ ভালো ডাক্তার আনো । বললে, অত পয়সা নেই আমার । সম্বলের মধ্যে সম্বল একগাছি রূপোর গোট ছিল আমার, তাই বাধা দিয়ে । আমি ডাক্তার ডেকে আনলাম—আর ও বলে কি না, যা খুশি করব।-- আমি মামা ! মুখপোড়া ! আমি বেঁচে থাকতে ভয় কি ঠাকুরঝি। আজই বন্দোবস্ত করে দিচ্চি, তুমি বাড়ি গিয়ে মেয়ের বিয়ে দাও গোদিয়ে যখন খুশি আবার এসো। দুৰ্গা খুটি ঠেস দিয়া তেমনি বসিয়া রহিলেন-তাহার দুই চক্ষু দিয়া কেবল ঝরে ঝর করিয়া জল গড়াইয়া পড়িতে লাগিল । “পোড়া কাঠ কণ্ঠস্বর কিঞ্চিৎ খাটাে করিয়া অদৃশ্য স্বামীকে লক্ষ্য করিয়া বলিতে লাগিল, অনাথ বলে ওর ওপর জুলুম করবে। কেন, মাথাব উপর ভগবান নেই কি ? আমি বলি, যা তোমার আছে তাই নিয়ে নাড়ো-চাড়ো, খাও দাও । পরের নিয়ে নিজের পেট মোটা করব কি জন্যে ? ভগবান কখনো তার ভাল করেন না । সেই দিনেই দুপুরবেলা যাত্রার সমস্ত বন্দোবস্ত ঠিক হইয়া গেল। গরুর গাড়িতে উঠিতে গিয়া দুৰ্গা 'পোড়া কাঠে’র দু’পায়ের উপর মাথা পাতিয়া আজ সত্য-সত্যই তাহ অশ্রািজলে ভিজাইয়া ফেলিলেন । কহিলেন, বেী, বড় ভাজ তুমি, তোমাকে ত আশীৰ্বাদ করিতে পারিনে —কিন্তু ভগবান তোমাকে যেন দেখেন। আমার জন্যে তুমি তোমার গোটছড়াটি পর্যন্ত নষ্ট করে ফেললে ! “পােড়া কাঠ আদ্যন্ত মাড়ি বাহির করিয়া হাসিয়া কহিল, ছাই গোটছড়া। এই বল ঠাকুরবি, হাতের নোয়া নিয়ে স্বামী-পুত্তরের গো-ব্রাহ্মণের সেবা করে যেন যেতে পারি । নাও, রোগা শরীরে আঃ দাড়িয়ে থেকে না-গাড়িতে উঠে বসে । গেনি, মামা-মামীর ঘরে অনেক কষ্ট পেয়ে গেলি মা , কিন্তু আবার আসিস-ভুলিসনে যেন - বলিয়া, তাহার হাতের মধ্যে জোর করিয়া দুটি টাকা গুজিয়া দিল। গাড়ি ছাড়িয়া দিলে দুৰ্গা চােখ মুছিতে মুছিতে কহিলেন, না বুন্টু