পাতা:অরক্ষণীয়া - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অরক্ষণীয়া WS দিনেই তঁহাকে একেবারে শয্যাশায়িনী করিয়া দিল। নীলকণ্ঠ মখয্যে-মশায়ের পরিবার মেজবেীকে দেখিতে আসিয়া একেবারে আকাশ হইতে পড়িলেন। চোখ কপালে তুলিয়া বলিলেন, এ কি করেচিস মেজবৌ, মেয়ের বিয়ে দিবি কবে ? ওর পানে যে আর চাইতে পারা 2 দুৰ্গা শ্রান্ত চােখদুটি নিমীলিত করিয়া ক্ষীণকণ্ঠে কহিলেন, কি জানি পিসিমা, কবে ভগবান মুখ তুলে চাইবেন ! তা ত জানি মা ! কিন্তু চেষ্টা করতে হবে ত ? ভগবান ত আর বীর জুটিয়ে এনে দিয়ে যাবেন না । দুৰ্গা আর জবাব দিলেন না । একমিনিট প্রতীক্ষা করিয়া তিনি পুনরায় কহিলেন, বলি বাপের বাড়ি গেলি, ভাই কিছু জোগাড় করে দিলে না ? দেওর কি বলে ? ভগবান জানেন। বলিয়া দুৰ্গা পাশ ফিরিয়া শুইলেন। ঘণ্টাখানেক পরেই আদরিণী বেড়াইতে আসিয়া চৌকাঠের বাহিরে দাড়াইয়াই উকি মারিয়া কহিল, বলি এ-বেলাটায় কেমন আছ মেজৰীে ? জ্ঞানদা শয্যার একপ্রান্তে বসিয়া মায়ের পায়ে হাত বুলাইয়া দিতেছিল, কহিল, জ্বর এখনও ছাড়েনি, পিসিমা । দুৰ্গা মুখ ফিরাইয়া চাহিয়া দেখিলেন। বলিলেন, বসে ঠাকুরব্বি । না বৌ, বেলা গেল, আর বসবো না। তা বলি কি মেজীবী, যাকে হোক ধরে উষ্ণুপ্ত করে দাও, আর খুতখুতে করো না । বলতে নেই —তখন তবুও মেয়েটার যা হোক একটু ছিরি ছিল, কিন্তু ম্যালেরিয়া জ্বরে একেবারে যেন পোড়া কাঠটি হয়ে গেছে। হঁ্যা লা গেনি, সুমুখের চুলগুলো বুঝি উঠে গেল ? জ্ঞানদা ঘাড় নাড়িয়া নীরবে নতমুখে বসিয়া রহিল। আদরিণী কণ্ঠস্বর মৃদু করিয়া কহিল, শুনচি নাকি ও-পাড়ার গোপাল ভট্টচায্যি আবার বিয়ে করবে। একবার অনাথদাকে পাঠিয়ে খবরটা কেন নিলে না মেজবৌ ?