পাতা:অরক্ষণীয়া - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অরক্ষণীয়া । 8S বড়জোয়ের এই অত্যন্ত অন্যায় আদেশে তাহার অন্তর জ্বলিতে লাগিল, তথাপি মুখ ফুটিয়া প্রতিবাদ করিতেও তাহার সাহস হইল না—পাছে, বলিতে গেলেই পালার শর্তমত, তাহাকে ভোরে উঠিয়া রাধিত হয় । পাবদিন যথাসময়ে কাকাকে সুনি-ঘরে যাইতে দেখিয়া, জ্ঞানদা ভাতের থালাটি হাতে করিয়া দিতে যাইতেছিল--কোথা হইতে জ্যাঠাইমা হা হা করিয়া চুটিয়া আসিয়া পড়িলেন-কোথা যাস লা গেনি ? জ্ঞানদা থিতামত খাইয়া বলিল, কাক সুন্নান করে এলেন যে ? তাতে তোর কি ?—বলিয়া জ্যাঠাইমা চোইয়া উঠিলেন-মানা করে দিয়েচি না ভাত বেড়ে নিয়ে যেতে ? তোর হাতে পুরুষমানুষ খেতে পারে লা ? দুৰ্গা সেইমাত্র উঠিয়া ঘরের সুমুখে বসিয়া ছিলেন-চেঁচামেচি শুনিয়া সভয়ে চাহিয়া রহিলেন । ছোটবৌ ঘর হইতে বাহির হইয়া জিজ্ঞাসা করিল, কি হয়েচে দিদি ? স্বর্ণ কাহারো প্রতি ভ্রক্ষেপ না করিয়া, সেই নিৰ্বাক নিম্পন্দ মেয়েটিকে লক্ষ্য করিয়া তিরস্কার করিতে লাগিলেন-হাতে করে থালা নিয়ে গেলে, কাক খুশি হয়ে তোমাকে মাথায় করে নিয়ে নাচবেরাজপুত্তরে এনে বিয়ে দেবে, না ? এই বয়সে কি মন যোগাতেই শিখেছিস, মাইরি ! বলিয়া থালাটা ছিনাইয়া লইয়া চলিয়া গেলেন । দুৰ্গা সহস্ৰ জ্বালায় জ্বলিয়া ক্রমশঃই অসহিষ্ণু হইয়া উঠিতেছিলেন ; মেয়েকে উদ্দেশ করিয়া কঁাদিয়া কহিলেন, পোড়ারমুখী, গুরুজনের কথা শুনাবিনে যদি, তোর মরণ হয় না কেন ? জ্ঞানদা নীরবে রান্নাঘরে চলিয়া গেল। একবার বলিল না, এবিষয়ে তাহাকে কেহই নিষেধ করিয়া দেয় নাই। মুখ তুলিয়া প্রতিবাদ করিতে সে বোধ করি জানিতই না । প্রতিবাদ যে করিতে পারিত, সে ছোটবেী। কিন্তু সে বডজাকে