পাতা:অরক্ষণীয়া - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অরক্ষণীয়া 8c মেয়েকে বিয়ে করবে বলে লেখাপড়া করে দিয়েছিল যে, এত লোকের মাঝখানে তেড়ে এসেচ ? যাও, ঘরে যাও-পালপাৰ্বণ আমোদআহিলাদের দিনে আমার বাড়িতে বসে অনাছিষ্ট কাণ্ড করে না । অনাছিষ্ট কাণ্ড আমি করতে আসিনি দিদি। বলিয়। অতুলের পানে চাহিয়া বলিলেন, যে করে আমাদের এই একটা বছর কেটেচে অতুল, সে তুমি জানো না-কিন্তু ভগবান জানেন। কিন্তু এই যদি তোমার মনে ছিল, কেন 'তার মরণকালে অ্যাশা দিয়েছিলে ? কেন তুমি তথুনি জানালে না ? স্বর্ণ রুখিয়া উঠিয়া কহিলেন, বাছাকে তুমি ভগবান দেখিয়ে না বলচি, মেজবেী, ভাল হবে না। আমরা বেঁচে থাকতে কথা দেবার কর্তা ও নয়। এত লোকের সমক্ষে অতুল নিজেকে অপমানিত বোধ করিতেছিল ; মাসীর জোর পাইয়া কহিল, আমি কি নিজে বিয়ে করব বলে কথা দিয়েছিলাম ? আমার পা ছাড়ে না-পায়ের উপর পড়ে মাথা খুড়তে লাগল-বাবাকে নিজের মুখের কথা দাও। করি কি ? অতি লোকের সামনে আমি লজ্জায় বঁাচিনে-তাই পা ছাড়াবার জন্যে যদি একটা কৌশল করে থাকি, তাকে কী কথা দেওয়া বলে ? স্বর্ণ খিলখিল করিয়া হাসিয়া কহিলেন, ওমা, কি ঘেন্নার কথা অতুল,-তুই বলিস কি রে ; ছুড়ি নিজে পায়ে ধরে বলে-আমায় বিয়ে কর ? আঁ্যা ? অতুল কহিল, সত্যি কিনা, ওকেই জিজ্ঞাসা কর না ? মেজমা সীমা নিজেই বলুন না, আমার পায়ের উপর মাথা খুড়তে দেখেছিলেন। কিনা ? নইলে ঐ মেয়েকে আমি বিয়ে করতে যাবো ? আমার কি মরবার দড়ি-কলসী জোটে না ? অতুলের সঙ্গীরা মুখ ফিরাইয়া হাসিয়া উঠিল। দুর্গা উন্মাদের মত চেচাইয়া উঠিলেন, ওরে নিষ্ঠুর। ওরে কৃতন্ত্র! দড়ি-কলসী আমি কিনে দেব রে, তুই মর গে! তোর মরাই উচিত। যে মেয়েকে