পাতা:অরক্ষণীয়া - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8\ჯტ অরক্ষণীয়া তুই এত লোকের সুমুখে এত বড় অপমান করলি, সেই মেয়েই যে তোকে যমের মুখ থেকে ফিরিয়ে এনেছিল রে! সব ভুলে গেলি ? চীৎকার শুনিয়া ছোটবেী ব্যথা ভুলিয়া ছুটিয়া আসিয়া দেখিল, স্বর্ণ লাফাইয়া উঠিয়াছে- তবে লো হতভাগী ! বেরো আমার বাড়ি থেকে-বোরো বলচি । জ্ঞানদা দাড়াইয়া ছিল । কিন্তু সে অচেতন পাথর হইয়া গিয়াছিল । লজ্জা, ঘূণা, অভিমান, অপমান, ভাল-মন্দ কিছুই তাহাকে স্পর্শ করিতেছিল না । এ-সমস্তরই যেন সে একান্ত অতীত হইয়াই নীরবে ফ্যালফ্যাল করিয়া চাহিয়া দাড়াইয়াছিল। এই অদৃষ্টপূর্ব মৃতির প্রতি চাহিয়া ছোটবেী সভায় একটা ঠেলা দিয়া ডাকিল, - জ্ঞানদা ? সে ঘরের ভিতর হইতেই কলহের কিছু কিছু শুনিতে পাইয়াছিল। জ্ঞানদা জবাব দিল, কেন খুড়িমা ? আর কেন দাড়িয়ে মা, তোর মাকে ঘরে নিয়ে যা । মা চল, বলিয়া জ্ঞানদা মায়ের হাত ধরিয়া ধীরে ধীরে তঁহাকে ঘরে লইয়া গেল । স্বর্ণ কহিলেন, দেখলি ছোটবোঁ, আস্পর্ধা ! একেই বলে, বামন হয়ে চাদে হাত । অতুল হাসিবার মত করিয়া দাঁত বাহির করিয়া কহিল, শুনলেন ছোটমাসিম কাণ্ডটা ? কি ভয়ানক লজ্জা ! স্বর্ণ খনখন করিয়া বলিলেন, একফোটা মেয়ে-এ কি ঘোর কলি ! ছোটবীে একটুখানি হাসিয়া কহিল,-ঘোর কলি বলেই বঁচোয়। দিদি ! নইলে আর কোন কাল হলে, মা বসুন্ধর এতক্ষণ লজ্জায় দুফািক হয়ে যেতেন, অতুল। বলিয়া ঘরে চলিয়া গেল। স্বর্ণ বিদ্রুপের তাৎপর্য না বুঝিয়া খুশি হইয়া বলিলেন, সেই কথাই ত বলচি ছোটবোঁ ।