পাতা:অরক্ষণীয়া - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

G3 ठद्धकौशां ফেলে। বঁচি। দিবা-রাত্রি আমাকে যেন জোকের মত কামড়ে পড়ে আছে। —বলিয়া একটা ঠেলা দিয়া মুখ ফিরাইয়া শুইলেন। বাস্তবিক মায়ের কথাটা সত্য যে, আর কোন মেয়ে হইলে সুদ্ধমাত্র মনের ঘূণাতেই আত্মহত্যা করিত,-এমন কত মেয়েই তা করিয়াছে। কিন্তু এই মেয়েটিকে ভগবান যেন কোন নিগুঢ় কারণে মা বসুন্ধরার মতই সহিষ্ণু করিয়া গড়িয়াছিলেন। সে নারবে উঠিয়া গিয়া নিয়মিত গৃহকার্যে প্রবৃত্ত হইল। এতবড় নির্দয় লাঞ্ছনাতেও মুহুর্তের জন্য আত্মবিস্মৃত হইয়া বলিল,-ন মা, মরতে আমিও জানি । শুধু তুমি ব্যথা পাবে বলেই সব সয়ে বেঁচে আছি । ঘরে প্রদীপ দিয়া গঙ্গাজল ছড়া দিয়া ধনা দিয়া, সে আর একটি ক্ষুদ্র দীপ হাতে করিয়া তুলসী-বেদীমূলে দিতে গেল। বাঙ্গালীর মেয়ে শিশুকাল হইতেই এই ছোট গাছটিকে দেবতা বলিয়। ভাবিতে শিখিয়াছে। এইখানে আসিয়া আজ তার সে কিড়তেই সামলাইতে পারিল না । গলাব্য আঁচল দিয়া প্রণাম কবিতে গিয়া আর উঠিতে পারিল না। দুই হাত সুমুখে ছড়াইয়া দিয়া কঁাদিয়া সাষ্টাঙ্গে লুটাইয়া পড়িল । ঠাকুর । দয়াময় । এইখানে তুমি আমার বাবাকে লইয়াছএইবার আমার মাকে আর আমাকে কোলে লইয়া আমার বাবার কাছে পাঠাইয়া দাও ঠাকুর । আমরা আর সহিতে পারিতেছি না। চৈত্রের শেষের কয়টা দিন বলিয়া ছোটবৌয়ের বাপের বাডি যাওয়া হয় নাই। মাসটা শেষ হইতেই তাহার ছোটভাই তাহাকে এবং মাধুরীকে লইয়া যাইবার জন্য আসিয়া উপস্থিত হইল। আজ ভাল দিন-খাওয়া-দাওয়ার পরেই যাত্রার সময়। অতুল বাড়ি আসিয়াছিল বলিয়া স্বর্ণ তাহাকেও নিমন্ত্রণ করিয়াছিলেন ।