পাতা:অরক্ষণীয়া - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অরক্ষণীয়া Ö ዓ ভালবাসিত তাহা ত’ জানে। কিন্তু তেমন দিনেও যে কখনো গায়ে পড়িয়া তাহার সুমুখে আসিবার চেষ্টা করে নাই, আজ সে যে তাঁহাই করিতে আসিয়াছে - এত বড় নির্লজ অপবাদ সে এত সত্বর বিশ্বাস করিপে কি করিয়া ? অপরায়ুবেলায় ছোটবেী মেয়ে লইয়া বাপেৰ বাড়ি চলিয়া গেল। কিন্তু যাইবার সময় মেজ-জায়ের সহিত দেখা করিয়া গেল না। শুধু একমুহুর্তের জন্য রান্নাঘরে ঢুকিয়া জ্ঞানদার হাতে একখানি দশ-টাকার নোট গুজিয়া দিয়া অনেকটা যেন চোরের মত পলাইয়া গেল । দাড়াইয় তাহার প্রণামটা পর্যন্ত গ্রহণ করিল না । বাটীর মধ্যে শুধু এই একটা লোক,-যে এই দুর্ভাগা মেয়েটাৰ ভিতরটা দেখিতে পাইয়াছিল - সেও আজ কি জানি কতদিনের জন্য স্থানান্তরে চলিয়া গেল। থাকিয়াও সে যে বিশেষ কিছু করিয়াছিল তাহা নয়-ব্যথা পাওয়া এবং ব্যথা দূৰ্ব করিবার জন্য সচেষ্ট হইয়া কাজ করা এক জিনিস নয়-সকলে তাহ পারে না, তবুও ছোটখড়িমাকে চলিয়া যাইতে দেখিয়া নিবিড় অন্ধকারে এই মেয়েটার সমস্ত আন্তর পরিপূর্ণ হইয়া গেল। বৈশাখের মাঝামাঝি একটা দিনে অনাথের অফিস যাইবার সময় বড়বেী মুখের উপর সংসারের সমস্ত দুশ্চিন্তা লইয়া আসিয়া দাড়াইলেন। অনাথ ভীত হইয়া কহিল, কি হয়েছে বৌঠান ? স্বর্ণ কহিলেন, তুমি করচ, কি ঠাকুরপো, মেজবৌয়ের যে হয়ে এলো । অনাথ হাতের হুকাটা ঠিক করিয়া রাখিয়া দিয়া পাংশুমুখে কহিল, দল কি ? কৈ আমি ত কিছু জানিনে । স্বর্ণ কহিলেন, না না, তা নয়, আজই সে মরচে না ; কিন্তু বেশী দিন আর নেই, তা বলে দিচ্চি। বড় জোর দশ-পনের দিন। তার পরে ছ'মাস একবছর ছুড়িটার বিয়ে দেবার জো থাকবে না। কিন্তু আমার মাধুরী মায়ের বিয়ে আমি এই আষাঢ়ের মধ্যেই দেব-ত কারু