পাতা:অরক্ষণীয়া - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অরক্ষণীয়া GS কাজের কথা পাড়িলেন। কহিলেন, তা মেয়ে বড় কি না, পাত্তরটি নেহাৎ ছোড়া হলেও ত আর মানাবে না মেজৰীে ! বাপ-মা নেই, তাই নিজেই ও-বেলা মগরা থেকে দেখতে আসবেন বলে পাঠিয়েচেন-কলা বা লুলা, বাপ-মা, অমর না হইলে আর পাত্রটির ও-বয়সে তাহদের বাচিয়া থাকা চলে না । স্বর্ণ বলিতে লাগিলেন, এখন মা কালী করেন, মেয়ে দেখে তার পছন্দ হয়, তবেই ত ছোটঠাকুরপোৱা দুটাছুটি হাঁটার্তাটি সার্থক হয় । তার পর আবার দেনা-পাওনার কথা-তা আমি বলি কিকথাটা শেষ না হইতেই দুৰ্গা সাগ্রহে উঠিয়া বসিয়া ছলছল চক্ষে চাহিয়া বলিলেন, আশীৰ্বাদ কর দিদি, এ সম্বন্ধটি আর যেন ভেঙ্গে না। যায় । আমি যেন দেখে যেতে পারি, বলিতে বলিতেই তাহার চোখ দিয়া দু’ফোটা জল গড়াইয়া পড়িল । স্বর্ণ বলিলেন, আশীৰ্বাদ করাচি বৈকি মেজৰীে, দিনরাত ঠাকুরকে জানাচ্চি-ঠাকুর, যা হোক মেয়েটার একটা কিনারা করে দাও । তা দেখবে বৈকি মেজৰীে-আমি বলচি, তুমি জামাইয়ের মুখ দেখে তবেদুৰ্গা নীরবে আঁচল দিয়া চোখ মুছিলেন। স্বর্ণ একটা হাই তুলিয়া, তুড়ি দিয়া একটু ইতস্ততঃ করিয়া কহিলেন, কাচ্চাব্বাচ্চার বাপ-—ঐ শুনতে দেড়শ মাইনে-নইলে কিছু নেই, সব জানি ত। নিজের মেয়টার কি করে যে দু’ হাত এক করবে, তাই ভেবে কাঠ হয়ে যাচ্চে । তার উপর আবার এটি। বুঝতে সবই তো পারো মেজবেী—তাই ঠাকুরপো বলছিল কি-র-লজ্জায় নিজে ত তোমাকে বলতে পারে নাবলছিল যে তোমার অংশের বাড়িটা বঁাধা না দিলে তা আর খরচপত্রের যোগাড় হয়ে উঠবে না-তোমাকে নিজে কিছুই করতে হবে না, শুধু একটা ঢেরা-সই করে দেওয়া। শুধু হাতে কেউ ত আর ধার দিতে চায় না-পোড়া কলিকাল এমনি যে, তুমি মরো আর বঁাচো, কেউ কারুকে বিশ্বাস করবে না দুৰ্গা তৎক্ষণাৎ বলিলেন, আমি আর ক'দিন দিদি, তোমরা আমাকে