পাতা:অরক্ষণীয়া - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অরক্ষণীয়া করিলেন না, কিন্তু আর কেহ তথায় উপস্থিত থাকিলে হয়ত সংশয় করিত, কি এমন কথাটা অতুল ঝোঁকের মাথায় বলিতে গিয়াও এমন করিয়া থামিয়া গেল । অতুল নিজেকে সামলাইয়া লইয়া উঠিয়া দাড়াইল । সহজভাবে কহিল, আচ্ছা, খুব চেষ্টা করব।-কৈ রে জ্ঞানদা, একটা পান-টান (ल ना-वांख् ियांश् । দুর্গামণি রাগিয়া চীৎকার করিলেন, তোব অতুলদারে একটা পান দে না গেনি। মুখপোড়া মেয়ের না আছে রূপ, না আছে গুণ । বলি, এ-সব কথাও কি শেখাতে হবে ? মহাপ্রসাদ নিয়ে সেই যে ঘরে ঢুকলি, আর বেরুলিনে। শীগগির পান নিয়ে আয়। আচ্ছা, আমি নিজেই গিয়ে পান নিচ্চি-কোন ঘরে রে জ্ঞানদা ? বলিয়া উচ্চকণ্ঠে সাড়া দিয়া অতুল শোবার ঘরে গিয়া প্রবেশ করিল। সম্মুখে পানের সজ্জা লইয়া মেয়েটি চুপ করিয়া বসিয়াছিল। অতুল ঘরে ঢুকিয়াই গম্ভীর হইয়া বলিল, মেজমা সিমা বলচেন, মুখপোড়া গেনির না আছে রূপ, না আছে গুণ । তাকে একটা ষাট বছরের বুড়োর সঙ্গে বিয়ে দিতে হবে। জ্ঞানদা জবাব দিল না ; অবনত-মুখে বাটা হইতে গোটা-দুই পান লইয়া হাত উচু করিয়া ধরিল। অতুল পিছনে আসিয়া হাত হইতে পান লইয়া কহিল, কিন্তু পান সাজা ভাল হলে এবার মাপ করা হবে, ষাটকে কমিয়ে না হয় কুড়িএকুশে দাড় করানো যাবে। জ্ঞানদা লজ্জায় মাথাটা বুকাইয়া প্রায় বাটার সঙ্গে এক করিয়া ফেলিল। অতুল গলা খাটো করিয়া বলিল, মাসিমার কাছে আর একটু হলে বলে ফেলেছিলুম আর কি! আচ্ছ, বেলা হ’ল, চললুম। জ্ঞানদা ইহারও প্রত্যুত্তর করিল না। সেই যে জড়-সড় হইয়া মাথা হেঁট করিয়া বসিয়াছিল, তেমনি বসিয়া রহিল ।