বা কি হয়েছে? বনবিবি তো সুরথের একার সম্পত্তি নয়। বনবিবি এখন আমাদের অনেককেই স্বপ্ন দিচ্ছেন।”
ডাব-বাবার দাবি মতো রোগীরা সত্যিই রোগমুক্ত হচ্ছেন কী না, জানার জন্য ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতি এবং পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা কমিটি যৌথ উদ্যোগে একটি তথ্য সংগ্রহ অভিযান চালান। আমরা ৫০ জন রোগীর ওপর অনুসন্ধান চালিয়ে ছিলাম। ৬ জন জানিয়েছিলেন ৩ বার জল খেয়ে সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন। ১১ জন জানালেন—অনেকটা ভাল আছেন। ৩৩ জন জানালেন—ফল পাইনি।
যে ৬ জন পুরোপুরি ও ১১ জন আংশিকভাবে রোগমুক্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছিলেন, সেই ১৭(৬ + ১১) জনের মধ্যে ১৪ জন সেই সব অসুখে ভুগছিলেন, যেসব অসুখ বিশ্বাসকে কাজে লাগিয়ে সারানো সম্ভব। একজন জানিয়েছিলেন তাঁর ক্যানসার হয়েছিল। বর্তমানে সম্পূর্ণ সুস্থ। আমাদের তরফ থেকে প্রশ্ন ছিল—আপনার যে ক্যানসারই হয়েছিল তা জানলেন কী করে? কত দিন আগে ক্যানসার ধরা পড়ে?
উত্তর ছিল—ডাক্তার বলেছিলেন, মাস ছয়েক আগে।
প্রশ্ন—কোন ডাক্তার, নাম কী? ঠিকানা কী?
উত্তর—কোন ডাক্তার অত মনে নেই।
প্রশ্ন—সে কী? এত বড় রোগ হল, ডাক্তার দেখিয়েছেন নিশ্চয়ই অনেক বার। আর ডাক্তারের নামটাই ভুলে গেলেন? ডাক্তারবাবু কি কোনও জায়গায় আপনাকে পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছিলেন—এই যেমন চিত্তরঞ্জন ক্যানসার হাসপাতাল বা ঠাকুরপুকুর ক্যানসার রিসার্চ সেণ্টার?
উত্তর-ঠাকুরপুকুর পাঠিয়েছিলেন।
প্রশ্ন-সেখানকার কোনও প্রেসক্রিপশন আছে কি?
উত্তর—না সে সব কোথায় হারিয়ে-টারিয়ে গেছে।
প্রশ্ন—এই মাস-দুয়েকের মধ্যেই সব হারিয়ে ফেললেন? কী করে জানলেন আপনার ক্যানসার সম্পূর্ণ ভাল হয়ে গেছে।
উত্তর—ডাক্তারবাবু দেখে বললেন।
প্রশ্ন—এই যে বললেন কোন ডাক্তার অত মনে নেই।
উত্তর—না, না। ডাক্তারবাবু মানে ঠাকুরপুকুরের ডাক্তারবাবু।
এই রোগীর ক্ষেত্রে দুটি সম্ভাবনা আছে। প্রথম ও জোরালো সম্ভাবনা হলো, রোগীটি একজন প্রতারক ও ডাব-বাবার প্রচারক। দ্বিতীয়টি হলো, চিকিৎসা বিজ্ঞানের সাহায্যেই ক্যানসার মুক্ত হয়েছে, ডাবের জলে নয়। ক্যানসার প্রথম পর্যায়ে ধরা পড়লে বহুক্ষেত্রেই আরোগ্য সম্ভব।
একজন জানিয়েছিলেন তাঁর গলব্লাডারে স্টোন হয়েছিল। ডাব-বাবার কৃপায়